মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সুপার, অধ্যক্ষদের নিয়ে রোগী কল্যাণ সমিতি ও পরিচালন সমিতির বৈঠক করছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। এ দিকে হাসপাতালে এইচআইভি আক্রান্তরা চিকিৎসা পরিষেবা নেন যে অ্যান্টি রেট্রভাইরাল থেরাপি কেন্দ্র (এআরটি সেন্টার) থেকে সেখানে সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে অনেকে। বেলা ১০টার মধ্যে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শতাধিক রোগীর লাইন পড়ে। অথচ চিকিৎসক নেই দেখে তাঁদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। অনেকে ফিরেও যান। দাঁড়িয়ে থাকা রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়রা হইচই শুরু করলে উত্তেজনা ছড়ায়। হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই এআরটি কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার মাসখানেক আগে ছুটি নিয়ে চলে যাওয়ার পর চিকিৎসক নেই। মেডিসিন বিভাগের জুনিয়র ডাক্তারদের দিয়েই সামলাতে হচ্ছে। এ দিন তাঁরা সময় মতো না গেলে রোগী এবং তাঁদের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পুলিশ এবং নিরাপত্তা কর্মীদের যেতে হয়। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক চলাকালীন এআরটি সেন্টারে চিকিৎসক না থাকায় সমস্যা জেনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জুনিয়র চিকিৎসকদের পাঠিয়ে কোনও ক্রমে পরিস্থিতি সামাল দেন।
হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সমস্যার কথা জেনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছেন। আগে অনেকে দেরিতে আসতেন। বায়ো মেট্রিক ব্যবস্থায় হাজিরা পদ্ধতি চালু হওয়ায় তা বন্ধ হয়েছে। তবে টিফিনের সময় বা কাজে যোগ দিয়ে চিকিৎসকেরা অন্যত্র যাতে না যান তাও দেখতে হবে।” হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, রাজ্য এডস নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ স্কিম থেকে এআরটি সেন্টারটিতে চিকিৎসক পাঠানো হয়। মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগ থেকে একজন চিকিৎসক নোডাল অফিসার থাকেন। এআরটি সেন্টারের চিকিৎসক তথা মেডিক্যাল অফিসার না থাকায় মাসখানেক ধরে সমস্যা চলছে।
হাসপাতালের অধ্যক্ষ অনুপ রায় বলেন, “বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়েছে।” মেডিসিন বিভাগের প্রধান উদয়শঙ্কর ঘোষ জানান, চিকিৎসক না-থাকার জন্য মেডিসিন বিভাগ থেকেই জুনিয়র চিকিৎসকেরা পরিষেবা দেন। তা নিয়েই সমস্যা হয়েছিল। তাঁর দাবি, এ দিন স্বাস্থ্য ভবনে এক বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। আশা করি শীঘ্রই চিকিৎসক পাঠানো হবে।
এ দিন চক্ষু বিভাগে নার্সরা কেউ না থাকায় সরঞ্জাম রাখার ঘর সময়ে খোলেনি। চিকিৎসকেরা থাকলেও রোগীদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়াতে হয়। বিভাগীয় প্রধান মানস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই বিভাগে ২ জন নার্স কাজ করেন। একজন ছুটিতে। অন্য জন অসুস্থতার কারণে না আসায় সমস্যা হয়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অন্য নার্সদের পাঠালে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ চিকিৎসা পরিষেবা শুরু হয়।”
|
ন্যাশনালে ঠাঁই পাভলভের সেই মা-শিশুর
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |