চিকিত্সককে মারধরে অভিযুক্ত যুব কংগ্রেসের তিন কর্মীকে মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন যুব কংগ্রেসের খড়্গপুর সদর বিধানসভা এলাকার সভাপতি ধীরাজ যাবদ। খড়্গপুর টাউন থানার আইসি অরুণাভ দাস বলেন, “চিকিত্সকের অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” অভিযুক্তদের পাশে নেই দলও। শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাস বলেন, “কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে চিকিত্সককে মারধর করা ঠিক হয়নি।” প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডেরও বক্তব্য, “ওই চিকিত্সকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ রয়েছে। তবে তাঁকে মারধর করা অন্যায় হয়েছে।” |
এক মৃতদেহের ময়নাতদন্ত নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। তার জেরেই মঙ্গলবার দুপুরে সায়ন্তন মুখোপাধ্যায় নামে ওই চিকিত্সককে মারধর করা হয়। সোমবার দুপুরে অগ্নিদ্বগ্ধ অবস্থায় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন ভি মঞ্জু (২৮) নামে এক মহিলা। তাঁর পুরো শরীর পুড়ে গিয়েছিল। ওই দিন গভীর রাতে তিনি মারা যান। বুধবার মহকুমা হাসপাতালেই ময়নাতদন্ত হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ঠিক ছিল ময়নাতদন্ত করবেন সায়ন্তনবাবু। তিনি অ্যানাস্থেটিস্ট। তবে তিনি ময়নাতদন্ত করতে রাজি হননি। জানিয়ে দেন, মেদিনীপুর মেডিক্যালেই ময়নাতদন্ত হবে। পরে মৃতার পরিজনেরা হাসপাতাল সুপার দেবাশিস পালের সঙ্গে দেখা করেন। সুপার তাঁদের আশ্বস্ত করেন, অন্য চিকিত্সক ময়নাতদন্ত করবেন। সেই মতো অন্য এক চিকিত্সকই ময়নাতদন্ত করেন। অভিযোগ, হাসপাতালের কাজ সেরে দুপুরে যখন সায়ন্তনবাবু বাইরে বেরিয়েছিলেন, তখনই এক দল যুবক তাঁকে মারধর করেন। এঁদের মধ্যে যুব কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরাও ছিলেন।
মারধরের ঘটনাটি ঘটে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের অদূরেই। বিকেলে খড়্গপুর টাউন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রহৃত চিকিত্সক। এরপরই তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সায়ন্তনবাবু মেদিনীপুর মেডিক্যালের চিকিত্সক। খড়্গপুর হাসপাতালে মাত্র দু’জন অ্যানাস্থেটিস্ট। তাই কয়েক মাস হল তাঁকে এখানে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল সুপারের কথায়, “কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ বা কোনও বক্তব্য থাকতেই পারে। তা লিখিত ভাবেও জানানো যায়। এ ভাবে চিকিত্সকদের মারধর করলে তো হাসপাতালের পরিষেবাই ব্যাহত হবে।” |