গরম তো বাড়ছে, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মশা। আর তাতেই নিদ্রাহারা দুর্গাপুরবাসী। তাছাড়া ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির আতঙ্ক তো আছেই। এ নিয়ে পুরসভার কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) লাভলি রায় জানান, ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে।
দুর্গাপুর আর পাঁচটা শহরের মতো ঘিঞ্জি নয়, ভূমির গঠনও জল জমার মতো নয়। কিন্তু তাও গত কয়েক বছর ধরেই মশার উপদ্রব বাড়ছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভার কাছে বারবার এ কথা জানানো হয়েছে, কিন্তু তেমন তৎপরতা দেখাননি পুর কর্তৃপক্ষ। তবে গত বছর ডেঙ্গি ছড়ানোর পর পুরসভার তরফ থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মাইকে প্রচার, আগাছা পরিস্কার, মশার লার্ভা মারার তেল ছড়ানো, রাসায়নিক স্প্রে করার কাজ শুরু হয়েছিল। তাতে অবশ্য মৃত্যু ঠেকানো যায়নি। গত বছর শহরে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০। তার মধ্যে এক কিশোরী ও এক বালিকার মৃত্যু হয়। |
এ বছরও শহরের বেনাচিতি, মেনগেট, ধান্ডাবাগ, কুড়ুরিয়াডাঙা প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারা জানান, সূর্য ডুবতেই মশার অত্যাচারে জেরবার তাঁরা। এমনকী শহরের অভিজাত এলাকা সিটি সেন্টারেও মশা কম নয়। তাঁরা জানান, রাতে কোনও কারণে বিদ্যুৎ চলে গেলে মশার কামড়ে ঘুমের দফারফা। বেনাচিতির রামকৃষ্ণ পল্লির কুমকুম ধর বলেন, “সন্ধ্যা নামতেই মশার জ্বালায় বাইরে বা বারান্দায় বসার উপায় থাকে না। ঘরেও মশা মারার ধূপ জ্বেলে রেহাই মিলছে।” সগড়ভাঙার বাসিন্দা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র রক্তিম বসু তো মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে মশারির মধ্যে বসেই পড়াশোনা শুরু করেছেন। কলাবাগান বস্তির বাসিন্দা সমর মণ্ডলেরও একই কথা। তিনি বলেন, “ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির আতঙ্কে দিন কাটছে।” সিটি সেন্টার এলাকার গৃহবধূ দোলা মিত্র বলেন, “বিকালে পার্ক থেকে ফিরলেই বাচ্চার পায়ের মশার কামড় দেখতে পাই। দুশ্চিন্তায় থাকি, কবে কি হয়।”
তবে পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই মশার উপদ্রব রোধে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেগুলির বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। লাভলিদেবী জানান, এত দিন বছরে তিন বার স্প্রে করা হতো। এ বার থেকে সাত বার স্প্রে করা হবে। এই কীটনাশকের প্রভাবে মশার লার্ভা মারা যায়। ইতিমধ্যেই প্রথম দফায় স্প্রে করা শুরু হয়েছে বলেও তাঁর দাবি। তিনি আরও জানান, অঙ্গনওয়ারি কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে প্রত্যেক ওয়ার্ডের জন্য একটি করে দল গড়া হয়েছে। আজ, বুধবার থেকে সেই দল বাড়ি বাড়ি ঘুরে দেখবে, কোথাও জল জমে আছে কি না। পাশাপাশি সচেতনতা প্রসারের কাজও করবেন তাঁরা। এছাড়া ১১ মে সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত একটি শিবিরেও এ নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি। |