সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবনের পরে এ বার সীমানা পাঁচিল তৈরি নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। পাঁচিলের কিছু ইঁট গাঁথার পরে আপাতত কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, হাইকোর্টকে না জানিয়েই পাঁচিলের নকশায় রদবদল করে বিপাকে পড়েছে পূর্ত দফতর। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটি থেকে প্রায় ৮ ফুট উচ্চতার পাঁচিলের নিচের অংশে ইঁটের গাঁথনি এবং ওপরের অংশের পুরোটাই নকশা হবে বলে স্থির হয়। অভিযোগ, কাজ শুরুর পরে হাইকোর্টকে না জানিয়েই নকশায় কিছু রদবদল করা হয়। কমিয়ে দেওয়া হয় পাঁচিলের প্রস্থ এবং উচ্চতা। সেই কারণেই হাইকোর্টের রুষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় আপাতত পাঁচিলের উপরের অংশ তৈরির কাজ বন্ধ। নতুন রদবদলে হাইকোর্টের অনুমোদন পাওয়া যাবে না বলে ধরে নিয়েই পুরোনো নকশাতেই কাজ করা যায় কী না তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
পূর্ত দফতরের সিভিল বিভাগের প্রধান বাস্তুকার করুণ দে বলেন, “নকশায় এমন কিছু রদবদল করা হয়নি। আগে উচ্চতা একটু বেশই ছিল, পরে সেটিকে কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়। নতুন করে অনুমোদন নেওয়ার বিষয় নেই। অনুমোদিত নকশা মেনেই কাজ হবে।” প্রধান বাস্তকার জানান, যে নির্মাণ সংস্থা কাজ করছেন তাঁদের কিছু সমস্যার জন্য কাজে একটু দেরি হচ্ছে বলে শুনেছি। শ্রমিক নিয়ে কোনও সমস্যা হয়েছে।
সম্প্রতি হাইকোর্টের থেকে স্থায়ী ভবনের নকশাতেও রদবদলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরে নির্মাণ কাজ শুরুর একমাসের মধ্যে স্থায়ী ভবনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সীমানা পাঁচিল তৈরি নিয়েও। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পাঁচিলের ক্ষেত্রে নিজেরা নকশায় রদবদল করে বিপাকে পূর্ত দফতর। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা দিয়ে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবনের জন্য অধিগৃহিত ৪০ একর জমির সীমানা পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু হয়। সীমানা পাঁচিল তৈরির নকশা অনুমোদন করে হাইকোর্ট। গত বছর সেপ্টেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং হাইককোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল জলপাইগুড়িতে স্থায়ী ভবনের শিলান্যাস করেন। সে সময় পাঁচিল তৈরির কাজও চলছিল। যদিও তার আগেই নকশায় কিছু রদবদল করে পূর্ত দফতর। কেন এই বদল? দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত দ্রুত কাজ শেষ করা এবং বরাদ্দের মধ্যেই কাজ শেষ করতেই পাঁচিলের ওপরের অংশের চওড়া অংশ কিছুটা কমানো ও নকশায় বদল করা হয়।
এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই চলছিল বলে জানা গিয়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে স্থায়ী ভবনের নকশা নিয়েই হাইকোর্ট বেঁকে বসায় সমস্যায় পড়ে পূর্ত দফতর। সীমানা পাঁচিলের নকশা রদবদলের কারণে হাইকোর্ট অসন্তুষ্ট হতে পারে আশঙ্কা করে আপাতত পুরানো নকশা অনুযায়ী কাজ শেষ করতে চাইছে পূর্ত দফতর। তবে বারবার নকশা বদলানোয় নির্মাণ কাজে সমস্যা হয়েছে। তার জেরেই আপাতত থমকে সীমানা পাঁচিলের ওপরের অংশের কাজ। |
