গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আমন্ত্রণে দার্জিলিং যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের নির্দেশে মঙ্গলবার মহাকরণে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে দার্জিলিং ম্যাল চৌরাস্তায় একটি সভায় যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান মোর্চার কালিম্পঙের বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী। মুখ্যমন্ত্রী তাতে সম্মতি দেন। ঠিক হয়, মুখ্যমন্ত্রী ১৪ মে মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরের দিন ম্যালের সভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর সফর ইঙ্গিত করছে, সরকারের সঙ্গে মোর্চার দূরত্ব কমেছে। রবিবার মিরিকে জিএনএলএফের সঙ্গে মোর্চার সংঘর্ষের জেরে বিমল গুরুঙ্গের অনুগামীরা পাহাড়ে অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ডাকেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, বন্ধ প্রত্যাহার না-করলে পাহাড়ে যাবেন না। এ নিয়ে দলের অভ্যন্তরে নানা চাপান-উতোরের পর বন্ধ স্থগিত করে পরিস্থিতি সামাল দেন গুরুঙ্গরা। হরকাবাহাদুরকে মহাকরণে পাঠিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করেন মোর্চা নেতৃত্ব।
এ দিন হরকাবাহাদুরের দাবি, “জিটিএ গঠনের পরে কেন্দ্রের কাছ থেকে ৬৫ কোটি টাকা পেয়েছে মোর্চা। সেই টাকায় রাস্তা ও দু’টি পার্কিং জোন তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী চান পাহাড়ে যৌথ উদ্যোগে ২৫টি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে। সেগুলি কোথায় হবে, তা চূড়ান্ত করতে বলেছেন আমাদের।” এ ছাড়াও বিজনবাড়ি, দলগাঁও এবং রিমবিকে টুরিস্ট লজ করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন।
গত জানুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড়-সফরের সময় মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে কেন্দ্র করে যে ঘটনা ঘটে, তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ বলে আখ্যা দেন মোর্চার কালিম্পঙের বিধায়ক। তাঁর কথায়, “আমরা একসঙ্গে পাহাড়ের উন্নয়ন করতে চাই।” সারদা-কাণ্ডে পাহাড়ে মানুষ প্রায় ৩০ কোটি টাকা লগ্নি করে ঠকেছেন বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন তিনি। পাহাড়ের মানুষের স্বার্থে দার্জিলিঙে নেপালি ভাষায় শ্যামল সেন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং কমিশনের একটি অফিস খোলার দাবিও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে আশ্বাসও দিয়েছেন।
এ দিকে, আগামী ২৪ মে পাহাড়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। সরকারি সূত্রের খবর, জিটিএ চুক্তিতেই বলা আছে, পাহাড়ে উন্নয়নের কাজ নজরদারি করার জন্য মাঝে-মধ্যে ত্রিপক্ষ বৈঠক করা হবে। সেই মতো ওই বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বৈঠকে থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব, মোর্চা এবং জিটিএ-এর প্রতিনিধি। |