স্কুল চত্বরেই প্যান্ডেল খাটিয়ে মাইক বাজিয়ে ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান করার অভিযোগ উঠল খোদ গ্রাম শিক্ষা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। মানবাজার থানার মহাড়া নিম্ম বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের এই ঘটনায় সোমবার থেকে স্কুলে পঠনপাঠন লাটে উঠেছে বলে অভিভাবকদের ক্ষোভ। আজ বুধবার ওই স্কুলেই প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি কানে যেতেই স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে স্কুল পরিদর্শন রিপোর্ট তলব করেছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) বৃন্দাবনচন্দ্র দাস। তিনি বলেন, “স্কুলে বাইরের কাউকে অনুষ্ঠান করতে দেওয়া ঠিক নয়। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে রিপোর্ট পাওয়ার পরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।” |
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ওই স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, স্কুলের সামনে বড় প্যান্ডেল। ভিতরে তখন খাওয়াদাওয়া চলছিল। স্কুলের ঘরগুলি বন্ধ। নেই পড়ুয়া। স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকের মধ্যে বংশী সহিস, কৃষ্ণপদ মাহাতো, গৌরাঙ্গ সহিসদের অভিযোগ, “গ্রাম শিক্ষা কমিটির সভাপতি ননীগোপাল রায়ের ছেলের বিয়ের জন্য স্কুলে ছুটি দেওয়া হয়েছে। বিয়ের দিন সোমবার থেকে ছেলেরা স্কুলে গিয়ে ফেরত আসছে। পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও, তা বাতিল হয়েছে। দিনরাত স্কুল চত্বরে মাইক বাজানো হচ্ছে।” ননীগোপাল বাবু স্থানীয় কামতা-জাঙ্গীদেবী পঞ্চায়েতের সদস্য হিসেবে এলাকার গ্রাম শিক্ষা কমিটির সভাপতিও বটে। তিনি স্থানীয় হাইস্কুলের অশিক্ষক কর্মী। তাঁর দাবি, “স্কুলের একটি ঘর ও চত্বর ব্যবহার করব বলে প্রধান শিক্ষককে মৌখিক অনুরোধ জানিয়েছিলাম। স্কুলের জমি আমাদেরই দেওয়া। এ নিয়ে এত হইচইয়ের কী আছে?”
স্কুলের সামনে দেখা মিলল শুধু সহকারী শিক্ষক সমীর মাহাতোর। তিনি কথা বলতে চানি। প্রধান শিক্ষক কৈলাস মাহাতোও স্কুলে ছিলেন না। ফোনে তিনি দাবি করেন, “গরমের জন্য এখন সকাল বেলায় স্কুল চলছে। বিয়ে বাড়ির জন্য পড়ুয়াদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে না।” প্যান্ডেল করার অনুমতি দিলেন কী ভাবে? প্রধান শিক্ষকের জবাব, “ননীগোপালবাবু গ্রাম শিক্ষা কমিটির সভাপতি। তাঁকে না বলি কি করে!” জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি নীলকমল মাহাতো বলেন, “স্কুলচত্বরে বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান করতে দিয়ে ঠিক কাজ করেনি। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মানবাজারের বাসিন্দা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ চৌধুরীর কটাক্ষ, “ওই তৃণমূল নেতার কী করবে তাঁর দল? নিয়ম ভাঙাই তো ওদের দলের সংস্কৃতি।” |