|
|
|
|
তালিকায় নাম শুধু, ভাতা পাননি প্রতিবন্ধী |
দেবমাল্য বাগচি • হলদিয়া |
প্রতিবন্ধী ভাতা না পেয়েও নাম রয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রকাশিত ভাতা প্রাপকদের তালিকায়। এমনই অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্রপতি ও পঞ্চায়েতি রাজ পুরস্কার প্রাপ্ত, তৃণমূল পরিচালিত অমৃতবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে একাধিকবার আবেদন করেও মাসিক ভাতা পান না বলে দাবি মহিষাদলের বাড় অমৃতবেড়িয়ার শঙ্করচন্দ্র ভৌমিকের। অথচ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রকাশিত ‘প্রধানের প্রতিবেদন’ শীর্ষক পুস্তিকায় আয়-ব্যায়ের হিসেব তালিকায় রয়েছে ষাট বছরের শঙ্করবাবুর মাসিক ভাতার উল্লেখ। মহিষাদলের এই গ্রাম পঞ্চায়েত নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েত হিসেবে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত। সম্প্রতি পঞ্চায়েতি রাজ স্বশক্তিকরণ পুরস্কারও পেয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে প্রকাশিত হয়েছে ৬৪ পাতার ‘প্রধানের প্রতিবেদন’ নামে এক পুস্তিকা। মূলত ২০১২-১৩ অর্থবর্ষের অর্ধ-বাত্সরিক অধিবেশন উপলক্ষে জনগণের কাছে নিজেদের সাফল্য তুলে ধরতেই এই পুস্তিকা প্রকাশ করেছে মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত অমৃতবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। এর ৪৮ নম্বর পাতায় রয়েছে শঙ্করচন্দ্র ভৌমিকের নাম। দেখানো হয়েছে মাসিক ৭৫০ টাকা করে বিডিও অফিস থেকে ভাতা পান শঙ্করবাবু। তাঁর কথায়, “পঞ্চায়েতে আবেদন করেও ভাতা পাইনি। অথচ পঞ্চায়েতের বইতে লেখা রয়েছে আমার নাম।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর ২০ আগে পায়ে মোরাম ঢুকে ইনফেকশন হয়ে যায় শঙ্কর ভৌমিকের। বহু চিকিত্সার পরেও যন্ত্রণার নিরসন হয়নি। ধীরে ধীরে অসাড় হয়েছে তাঁর ডান পা। বাঁশের ওপর ভর দিয়েই চলাফেরা করতে হয় তাঁকে। স্ত্রীর সঙ্গে বাড়িতে কাগজের ঠোঙা তৈরি করে কোনও রকমে সংসার চালান তিনি। দুই মেয়ের বিয়ে হলেও বন্ধ হয়ে গিয়েছে ছেলের পড়াশুনো। এই পরিস্থিতিতে ২০০৮ সালে গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য আবেদন জানান। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্লক অফিস থেকে একটি তিন চাকার সাইকেলও পেয়েছেন। তবে মেলেনি ভাতা। কিন্তু ভাতা পাচ্ছেন বলে পঞ্চায়েতের পুস্তিকায় উল্লেখ থাকায় গ্রামের লোকেরা শঙ্করবাবুকে জানাতেই টনক নড়ে তাঁর। ব্যাঙ্কের বই পরীক্ষা করে দেখেন সেখানেও কোনও ভাতা জমা পড়েনি। এর পর তিনি মহিষাদলের বিডিও ও জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অমৃতবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান দীপা পণ্ডা বলেন, “আমরা বিডিও অফিস থেকে তথ্য পেয়ে ছাপিয়েছি।” কিন্তু তথ্য যাচাই না করে সাফল্য হিসাবে কেন প্রচার করা হল? এর অবশ্য সদুত্তর মেলেনি। যদিও মহিষাদলের ভারপ্রাপ্ত বিডিও প্রদ্যুত্ পালই জানান, “সমাজকল্যাণ দফতরের ভাতার জন্য গত বছর অগস্টে চার জনের নামের সঙ্গে শঙ্কর ভৌমিকের নাম জেলায় পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তা কেন চালু হয়নি জানি না। শঙ্করবাবুর নাম কী ভাবে পুস্তিকায় এল তা পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে জানতে চাইব।” |
|
|
|
|
|