বাম পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেও আইনের মারপ্যাঁচে পিছিয়ে যেতে হল তৃণমূলকে। মঙ্গলবার হলদিয়া পুর-কর্তৃপক্ষ তৃণমূল কাউন্সিলরদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, অনাস্থা প্রস্তাব-পত্রে নির্দিষ্ট আলোচ্যসূচি না থাকায় অনাস্থা বৈঠক ডাকা সম্ভব নয়। এই প্রেক্ষিতে আইনগত কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বিরোধী তৃণমূল।
বাম পরিচালিত হলদিয়া পুরসভার কাজে দীর্ঘ ১১ মাস ধরে টানা বিরোধিতার পর গত ২ মে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন তৃণমূলের ১১ জন কাউন্সিলর। ২৬ আসনের পুরসভার বোর্ড পাল্টে দিতে অন্তত ১৪ জন কাউন্সিলর প্রয়োজন তৃণমূলের। অন্দরের খবর, প্রথম দিকে ৪ বাম কাউন্সিলরের উপরে ভরসা করলেও এখন পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান বাদে সমস্ত বাম কাউন্সিলরকেই দলে টানার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল। কখনও কাউন্সিলরদের নাতির স্কুলে বৌমাকে বোঝাচ্ছে, তো কখনও ফোনে পার্টি অফিসে ডেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ বামেদের। এর মধ্যেই তৃণমূলের অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠিতে কিছু ত্রুটি পায় বামেরা। তা নিয়ে আইনজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শের পর সোমবার পুর-পারিষদদের নিয়ে বৈঠকে বসেন পুরপ্রধান তমালিকা পণ্ডা শেঠ।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল কাউন্সিলররা পুরবোর্ডে অনাস্থা ও পুরপ্রধানের পদত্যাগএই দু’টি বিষয় জানিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে অনাস্থা বৈঠক ডাকার দাবি জানিয়েছিলেন চিঠিতে। পুরবিধি অনুযায়ী নির্দিষ্ট একটি বিষয় জানাতে হয় অনাস্থা প্রস্তাবে। সেটির অভাবেই ‘উক্ত নোটিসের ভিত্তিতে সভা ডাকা সম্ভব হচ্ছে না’ বলে বিরোধীদের জানিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। পরে নির্দিষ্ট একটি আলোচনার দাবিতে বৈঠকের কথা জানালে ভেবে দেখা হবে বলেও তৃণমূল কাউন্সিলরদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অর্থাত্, আইন মেনে তৃণমূল ফের অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠি দিলে, তবেই বৈঠক ডাকা হবে। সেক্ষেত্রে পুরবিধি অনুযায়ী আরও ১৫ দিন সময় পাওয়া যাবে হাতে।
চিঠি পাওয়ার পরে এ দিন পুরসভায় অবিলম্বে অনাস্থা বৈঠক ডাকা ও দুর্নীতির অভিযোগে মিছিল করেন তৃণমূলের কাউন্সিলররা। বিরোধী দলনেতা দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “চিঠি পেয়েছি। আইন অনুযায়ী এগোব। তবে অনাস্থা থেকে সরছি না। দুর্নীতি নিয়ে আন্দোলন চলবেই।” তমালিকা পণ্ডা শেঠ বলেন, “ওঁদের চিঠিতে পুরবিধি অনুযায়ী নির্দিষ্ট আলোচ্যসূচি না থাকায় অনাস্থা বৈঠক সম্ভব নয়। আমরা চিঠি দিয়ে তা জানিয়েছি। সমস্ত কিছু আইন মেনেই হয়েছে। ওঁরা আইন মেনে যা করার করুক। তারপর সিদ্ধান্ত নেব।” |