কোনও লড়াই না দিতে পেরে ম্যাচ হারা। শাহরুখ-বিতর্ক। আইপিএল থেকে এক রকম বরখাস্ত হয়ে যাওয়া। এ সবের পিঠোপিঠি মঙ্গলবার কেকেআরকে তাড়া করল প্লেয়ার বিদ্রোহ। আর সেই বিদ্রোহের মুখ বাংলার মনোজ তিওয়ারি।
মনোজকে ঘিরে এ দিন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা অভূতপূর্ব। গোটা কেকেআর ম্যানেজমেন্টকে হতভম্ব করে তিনি একটা টুইট করেন, যে টুইটে লেখা: ‘আমার ক্রিকেটজীবনের সবচেয়ে খারাপ দিন। সারা জীবন এই দিনটা হজম করতে পারব না।’ এটা করা হয় টসের কাছাকাছি সময়ে টিম হোটেল থেকে। মনোজ আসলে মুখিয়ে ছিলেন এ দিন ফিট অবস্থায় নেমে ভাল পারফর্ম করবেন। ইডেনে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে রান পেয়েছিলেন। এ ছাড়াও ওয়াংখেড়েতে প্রচুর রান আছে তাঁর। ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার পর এ রকম বড় ম্যাচ, বড় মুহূর্ত, তাঁর চাই। অথচ সম্পূর্ণ আশ্চর্য করে অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর এ দিন জানিয়ে দেন, পনেরো জনের দলে তিনি মনোজকে রাখেননি। তার চেয়েও যেটা লজ্জার, পনেরো জনে নেই বলে তিনি টিম বাসে করে ওয়াংখেড়ে যাওয়ারও অনুমতি পাবেন না। আরও চার জন খেলোয়াড়ের সঙ্গে তাঁকে হোটেলেই থেকে যেতে হবে।
এটা শুনে মনোজ প্রচণ্ড ক্ষেপে যান। বলতে থাকেন, আমি পনেরো জনের মধ্যে নেই, আমাকে মাঠে নিয়ে যাওয়া হবে না, কী ভেবেছ কী তোমরা? পনেরো জনের মধ্যে এ দিন রাখা হয়নি সামি আহমেদকেও। মনোজ বলতে থাকেন, আমি আর সামি ইন্ডিয়া প্লেয়ার। আমাদের এ ভাবে বাইরে রাখছ কেন? এটা অত্যন্ত অন্যায়। কোচ বেলিসের কাছে তিনি জবাবদিহি চান। গৌতম গম্ভীরকে চেঁচিয়ে বলেন, খুব বাজে সিদ্ধান্ত নিলে। এর পর চলে যান জয় মেটার সঙ্গে কথা বলতে। মেটাকে বলেন, ক্রিকেটের সূক্ষ্ম দিকগুলো বোঝে না এমন সব লোক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এই নিয়ে টিম যাওয়ার আগে একপ্রস্ত অবাঞ্ছিত আবহাওয়া তৈরি হয়। তা বলে তিনি টুইট করে দেবেন, কেউ ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি। রাতের দিকে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর বুঝে মনোজ ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন। এ বার দাবি করেন, তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কেউ এ সব কথা লিখেছে। যদিও এটা বিশ্বাস করার লোক কেকেআর মহলেও তিনি পাননি। মিডিয়া ম্যানেজার দীনেশ চোপড়া মনোজের এই দাবির কথা শুনে বললেন, “কী আর বলব?”
সব মিলিয়ে কেকেআরের বিসর্জনের দিনে মনোজের কাহিনিও যেন বিয়োগান্ত। তাঁর উইনিং স্ট্রোকেই কিন্তু চেন্নাইয়ে কেকেআরের ট্রফি এসেছিল! |