নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বড় ছেলের
মার্সিডিজ কিনে দু’মাসেই বিক্রির চেষ্টা ঘিরে রহস্য
বোতাম টিপলেই খুলে যায় ছাদ। শখ করে ৬৫ লক্ষ টাকায় এমনই একটি ‘মার্সিডিজ বেঞ্জ’ কিনেছিলেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। ‘সেকেন্ডহ্যান্ড’ গাড়িটি কেনা হয়েছিল তাঁর ছেলে শুভজিৎ (রাজা)-এর জন্য।
সোমবার রাতে দেশপ্রিয় পার্ক এলাকায় পুরনো গাড়ি কেনাবেচার একটি দোকান থেকে গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেন গোয়েন্দারা। তাঁরা জানান, সারদা গোষ্ঠীর প্রধান কার্যালয় থেকে বাজেয়াপ্ত করা ফাইলপত্র থেকেই গাড়িটির সন্ধান মেলে।
পুলিশ জানায়, গাড়িটির নম্বর এইচআর ১০-জে ৩৪৩৪। গাড়িটি ই-৩৫০ মডেলের। বিলাসবহুল এই গাড়িটি বেশি ব্যবহার করতেন সুদীপ্তের ছেলে। ফেব্রুয়ারিতে গাড়িটি কেনা হলেও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে সেটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন সুদীপ্ত। গাড়িটি তিনি পাঠিয়ে দেন দেশপ্রিয় পার্কের কাছে পুরনো গাড়ি কেনাবেচার একটি দোকানে। ওই দোকানের মালিক তাপস পাল বলেন, “এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে বিক্রির জন্য গাড়িটি আমাদের গ্যারাজে পাঠানো হয়। এখনও ক্রেতা মেলেনি।” তিনি জানান, সুদীপ্ত আগেও ওই দোকানের মাধ্যমে গাড়ি বিক্রি করেছেন।
তদন্তকারীরা জানান, সুদীপ্ত গাড়ি কিনতেন চেক মারফত। শখ করে ছেলের জন্য কেনা মার্সিডিজ গাড়িটি কেন সুদীপ্ত দু’মাসের মধ্যেই বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, ব্যবসার ডামাডোল অবস্থা দেখেই গাড়ি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন সুদীপ্ত। তাঁর শখের ওই সাদা গাড়িটি এখন রয়েছে সল্টলেকের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় সারদা গোষ্ঠীর আর পাঁচটা বাজেয়াপ্ত করা গাড়ির সঙ্গে।
গোয়েন্দাদের অনুমান, আরও দু’টি ‘মার্সিডিজ বেঞ্জ’ গাড়ি ছিল সুদীপ্তের। সেগুলি তিনি আগেই বিক্রি করে দেন। এ ছাড়াও তাঁর গাড়ির তালিকায় রয়েছে একটি বিএমডব্লিউ, একটি অডি এবং একটি ফরচুনা গাড়ি। ওই গাড়িগুলো কোথায় রয়েছে, তার খোঁজ চলছে।
সুদীপ্তর মার্সিডিজ।—নিজস্ব চিত্র
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার হিডকো-র প্রাক্তন আধিকারিক অঞ্জন ভট্টাচার্য, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার, সজ্জন অগ্রবাল, সারদা গোষ্ঠীর এক ডিরেক্টর এবং এক ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, বাম ও তৃণমূলের আমলে বিভিন্ন নেতার সঙ্গে ব্যবসায়ীদের আলাপ করিয়ে দিতেন অঞ্জনবাবু। তার জন্য তিনি টাকাও পেতেন। সারদা গোষ্ঠীর তছরুপের ঘটনায় এ দিন গোবিন্দপ্রসাদ গিরি ও হেমন্ত প্রধান নামে দু’টি লোকের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সুদীপ্তকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সজ্জন শিলিগুড়ির এক চা-বাগানের মালিক। তাঁর সঙ্গে সম্প্রতি সুদীপ্তের ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল। সজ্জন ও ইস্টবেঙ্গলের কর্মকর্তা দেবব্রতবাবুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগে উত্তরবঙ্গের চা-বাগানে বিনিয়োগ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন সুদীপ্ত। জেরায় সুদীপ্ত জানান, ব্যবসা মার খাচ্ছে বুঝতে পেরে তিনি ঠিক করেন, ‘মিডিয়া’র ব্যবসা বিক্রি করে আমানতকারীদের ধার শোধ করবেন। একটি ইংরেজি দৈনিক এবং একটি বাংলা দৈনিক বিক্রির ব্যাপারে প্রাথমিক কথাবার্তাও শুরু হয় বলে তিনি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন।
পুলিশ সুদীপ্তকে জেরা করে সারদার আর এক জন গুরুত্বপূর্ণ কর্মীর কথা জানতে পেরেছে। সুদীপ্ত তাদের জানান, ওই মহিলা সারদা গোষ্ঠীতে ‘প্রোগ্রাম অ্যানালিস্ট’ হিসেবে কাজ করতেন। প্রথমে তিনি ছ’হাজার টাকা বেতন পেলেও পরে তাঁর বেতন হয় ২০ হাজার। ‘প্রোগ্রাম অ্যানালিস্ট’ হিসেবে কোনও অভিজ্ঞতা না-থাকলেও কী ভাবে তিনি ওই গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করতেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.