প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখা একটি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন বাড়ির মেজো ছেলে ছোটন রায়। পুরুলিয়া শহরের দেশবন্ধু রোডের বাসিন্দা, পেশায় বিএসএনএল কর্মী রতনকুমার রায় শনিবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছেলেকে আত্মীয়দের বাড়ি থেকে বন্ধু-বান্ধবের বাড়ি, কোথাও খুঁজতে বাকি রাখেননি। সোমবার সকালে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রকাশিত একটি সংবাদ মিলিয়ে দিল বাবা ও ছেলেকে। |
রবিবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর স্টেশনে চোখে-মুখে ক্ষত নিয়ে হলদিয়া-আসানসোল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের সামনে হাঁটছিলেন বছর তেইশের ছোটন। ট্রেনের চালক ও গার্ড ঘটনাটি দেখে স্টেশন ম্যানেজারকে খবর দেন। ট্রেন থামিয়ে রেল পুলিশ উদ্ধার করে ওই যুবককে। রক্তাক্ত অবস্থায় পাঠানো হয় বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে। তাঁর পকেটে মেলে রতনকুমার রায়ের নামে লেখা অর্থলগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালীর কিছু সার্টিফিকেট। সেই খবর পড়েই সোমবার দুপুরে সহকর্মী অঞ্জন দৈবঞ্জকে নিয়ে বিষ্ণুপুর স্টেশনে চলে আসেন রতনবাবু। ওখান থেকে সোজা হাসপাতাল। সেখানে তখন ছোটনকে নিয়ে ছোটাছুটি স্বাস্থ্যকর্মীদের। শল্য বিভাগ ছেড়ে হাতে ঢিল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন ওই যুবক। থানায় খবর পাঠান ওয়ার্ড মাস্টার। অবস্থা সামাল দেয় পুলিশ। ছোটনকে শল্য বিভাগে পাঠিয়ে চলে তাঁদের নজরদারি।
এই সময় বাবাকে দেখেই সব রাগ জল। “এখনই বাড়ি যাব।”আবদার ছেলের। চোখের জলে ভাসলেন বাবাও। রতনবাবু বললেন, “পুরুলিয়ায় মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছি। চোখে চোখে রাখতাম। কিন্তু দরকারি ব্যাগটা নিয়ে এ ভাবে যে ও বেরিয়ে পড়বে, তা ভাবতে পারিনি। রোজ ভ্যালীর সার্টিফিকেট ছাড়া সবই গিয়েছে।” তিনি জানান, অসুস্থতার আগে ছোটন নিজেও ওই সংস্থার এজেন্ট ছিলেন। কী করে তিনি জখম হলেন, তা-ও বুঝতে পারছেন না।
বিষ্ণুপুর হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার নিবেদিতা মিশ্র বলেন, “মাথায় ভাল চোট রয়েছে হলে বাঁকুড়া মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছিল ওই যুবককে। রোগীর বাবা পুরুলিয়া হাসপাতালে ভর্তি করাবেন বলে নিয়ে গেলেন।” বিষ্ণুপুরের ডেপুটি স্টেশন ম্যানেজার দীপক দত্ত জানান, পাঁচটি সার্টিফিকেট ছিল ছোটনের কাছে। সবই তাঁর বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। |