অস্বস্তিকর নানা পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্য জুড়ে তৃণমূল সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান শুরু হল। রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতরের উন্নয়নকে থিম করে রামপুরহাটে এই অনুষ্ঠানের সূচনা হল রবিবার। সেই সঙ্গে বিগত দু’ বছরে জেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকে তুলে ধরা হয়েছে প্রদর্শনীর মাধ্যমে। রামপুরহাট পুরসভার মাঠে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রাণিসম্পদ দফতরের মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক তথা উচ্চ শিক্ষা দফতরের পরিষদীয় সচিব আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, রামপুরহাট মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায় প্রমুখ।
এ দিন মত্স্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ সংবাদমাধ্যকে আক্রমণ করে বললেন, “আপনারা এই প্রদর্শনীর কথা বাইরে প্রচার করুন। তা না হলে কিছু অসাধু সংবাদমাধ্যম সরকারকে নিয়ে জনসাধারণের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে।” সকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রদর্শনী শুরু হয়েছে বোলপুরেও। উদ্যোক্তা পর্যটন দফতর। ওই দফতরের সচিব বিক্রম সেন বলেন, “উত্তরবঙ্গ, সুন্দরবন, দিঘার মতো বীরভূমেও পর্যটনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।”
এ বারের অনুষ্ঠানের থিম ‘উন্নয়নের পথে মানুষের সাথে’। |
চলছে প্রদর্শনীর স্টল। রামপুরহাটে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম। |
অনুষ্ঠানের থিমে মানুষের সঙ্গে থাকার কথা বলা হলেও তার উল্টো চিত্র ধরা পড়ল রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিত্সক উদয়ন চৌধুরী শনিবার ইস্তফা দিয়েছেন। তবে তিনি রবিবার সকালে সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া ৭০ শতাংশ আগুনে পুড়ে যাওয়া এক বধূর চিকিত্সা করেত এসেছেন। উদয়নবাবুর কথায়, “আমি ব্যক্তিগত কারণে ইস্তফা দিয়েছি। শনিবার হাসপাতাল সুপারও আমার ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেছেন। রবিবার আমার কোনও ডিউটি ছিল না। কিন্তু হাসপাতাল এবং রোগীর অবস্থার কথা ভেবে কাজ করেছি।”
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বছর দেড়েক আগে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে। ২০১১ সালে হাসপাতালের একমাত্র অর্থোপেডিক চিকিত্সক শ্রবণকুমার ঘোষ চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে রোগীদের চাপ সামলাতে ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন থেকে চুক্তির ভিত্তিতে উদয়ন চৌধুরীকে রামপুরহাটে নিয়োগ করা হয়। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগ কার্যত বন্ধ হয়ে গেল। হাসপাতাল সুপার হিমাদ্রী হালদার বলেন, “শ্রবণকুমার ঘোষ চলে যাওয়ার পরে স্বাস্থ্যভবন থেকে এখনও অর্থোপেডিক চিকিত্সক পাওয়া যায়নি।” সুপার আরও বলেন, “এলাকাটা যেহেতু জাতীয় সড়কের ধারে এবং পাথর শিল্পাঞ্চল রয়েছে তাই এই হাসপাতালে দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীরা ভর্তি হন। সার্জিক্যাল বিভাগে দৈনিক ৩০ জন রোগীর মধ্যে ১৫ জন অর্থোপেডিকের। এখানে অর্থোপেডিক চিকিত্সক অবশ্যই দরকার।”
বোলপুর থেকে একজন অর্থোপেডিক চিকিত্সককে দেওয়ার জন্য সিএমওএইচকে বলেছি।” সিএমওএইচ গুরুদাস পাত্র বলেন, “বললেই সব সময় পাওয়া যায় না। তাদেরও চিকিত্সক দরকার পড়ে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। রামপুরহাটে যাতে স্থায়ী অর্থোপেডিক চিকিত্সক পাওয়া যায়, সে জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে জানাব।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত আশিসবাবু অবশ্য বলেন, “রামপুরহাট হাসপাতালের সমস্যার কথা জানা নেই। এ দিন প্রথম শুনলাম। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।” |