সাম্বার ছন্দে ব্রাজিলের ফুটবল প্রশিক্ষণ এ বার থেকে শিলিগুড়িতেই নিতে পারবেন কচিকাঁচারা। সৌজন্যে ‘ব্রাজিল ফুটবল অ্যাকাডেমিয়া’। যে কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন দুই তারকা ফুটবলার বেটো এবং ব্যারেটো। বস্তুত, রবিবার শিলিগুড়ির শালবাড়িতে ওই অ্যাকাডেমি টেকনো ইন্ডিয়া গোষ্ঠীর একটি স্কুলের সঙ্গে যৌথভাবে ‘স্কুল ফুটবল প্রশিক্ষণ’ ব্যবস্থার উদ্বোধন হল। উপস্থিত ছিলেন হোসে র্যামিরেজ ব্যারেটো, ব্রাজিল ফুটবল অ্যাকাডেমির কোচ জুলিয়ানো। বেটোর আসার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর এ দিনের সফরসূচি বাতিল হয়। শিলিগুড়ির টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ পাবলিক স্কুলে তাদের এই প্রশিক্ষণ শিবির উত্তর পূর্বাঞ্চলে প্রথম বলে জানান অ্যাকাডেমির উত্তর পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বে থাকা অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন বেলা ১০ টায় ব্যারেটো এবং জুলিয়ানো ফুটবলে পা ছুঁইয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। ব্যারেটো বলেন,“ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে সম্পূর্ণতার অভাব রয়েছে। বল রিসিভিং থেকে ড্রিবলিং, সে সমস্ত ‘টেকনিক’-গুলিতে তাঁদের দক্ষ হওয়া উচিত বিশেষ কোনও ফুটবলারের মধ্যে একই সঙ্গে সেই গুণগুলি দেখাই যায় না।” এই সমস্যা দূর হলে ভারতীয় ফুটবল আরও উন্নতি করবে বলে তিনি মনে করেন। ব্যারেটো জানান, স্কুল ফুটবল প্রশিক্ষণে তাই তাঁদের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের সব ‘টেকনিক’গুলিতে দক্ষ করে তোলা। কোনও বিশেষ শিক্ষার্থীর ঘাটতিগুলি মেটাতে সাহায্য করা। প্রতিমাসে তার উপর রিপোর্ট দেওয়া হবে। এখান থেকে যে সমস্ত প্রতিভা উঠে আসবে তাদের কলকাতার আবাসিক শিবিরে রেখে উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। সেই সঙ্গে তাদের পড়াশোনারও খরচ-সহ অন্য ব্যবস্থাও করবে অ্যাকাডেমি। বিদেশি কোচের পাশাপাশি দেশের নামকরা কোচেদেরও সামিল করা হবে প্রশিক্ষণে। স্থানীয় কোচদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগানো হবে। সে ক্ষেত্রে লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোচদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। |
রবিবার দাগাপুরে ফুটবল প্রশিক্ষণ স্কুলের উদ্বোধনে ব্যারেটো ও জুলিয়ানো।—নিজস্ব চিত্র |
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উরগেন লামা, ধেনডুপ ভুটিয়া, শ্যাম লামা, মনজিৎ সিংদের মতো স্থানীয় প্রাক্তন ফুটবলাররাও। প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সমস্ত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ পাবলিক স্কুলের অধ্যক্ষা মীরা ভট্টাচার্য। অ্যাকাডেমি সূত্রে জানা গিয়েছে, গোয়াতে তারা প্রথম ফুটবল অ্যাকাডেমির সূচনা করেছিলেন। শিলিগুড়ির কেন্দ্রে ৬ থেকে ১৪ বছরের ছাত্রদের ৩টি বিভাগে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৬-৮, ৯-১১ এবং ১২-১৪ বছরের তিনটি বিভাগ থাকছে। সোমবার থেকে শুক্রবার প্রশিক্ষণ হবে। অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণ নেবেন শনিবার এবং রবিবার।
টেকনো ইন্ডিয়া গোষ্ঠীর স্কুলের ছাত্ররা ছাড়াও অন্য ছাত্ররাও সুযোগ পেতে পারবেন। তবে তাদের কিছুটা বেশি ফি দিতে হবে। আপাতত শিলিগুড়ি থেকে শুরু হলেও পরবর্তীতে সিকিম এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতেও এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে অ্যাকাডেমির তরফে জানানো হয়েছে।
আগামী মরশুমেও ব্যারেটো ভবানীপুর ক্লাবে খেলবেন কি না জিজ্ঞেস করা হলে বলেন, “এখনও সময় রয়েছে। পরের মরশুম এলে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। তবে এখনও খেলার জন্য আমি সম্পূর্ণ ফিট।” |