|
|
|
|
রাজ্য সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূতির্তে ১৭ দিনের মেলা |
স্টল সাজার আগেই সাড়ম্বর উদ্বোধন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
এক দিকে স্টল সাজানোর কাজ চলছে, অন্য দিকে উদ্বোধন হচ্ছে মেলার।
মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হল ময়দানে রবিবার রাজ্য সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির প্রদর্শনী ও মেলার উদ্বোধনে সামনে এল অব্যবস্থার এমনই নানা ছবি। ২০টি স্টলে গুচ্ছ গুচ্ছ ফ্লেক্স পড়ে। যাতে বিভিন্ন দফতরের কিছু কিছু কাজের ছবি ও সেই সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। তা-ও সমস্তটাই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার।
সরকারি ভাবে যদিও এই মেলা ও প্রদর্শনী জঙ্গলমহলের তিনটি জেলা নিয়েপশ্চিম মেদিনীপুর,পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার। আজ অর্থাৎ সোমবার আরও ৫টি স্টল তৈরির কথা। সেই সমস্ত স্টলে অন্য জেলার উন্নয়নমূলক কাজের কিছু নমুনা তুলে ধরা হতে পারে।
|
মেলার নানা ছবি
|
ফাঁকা মাঠে স্টল সাজেনি তখনও। |
উদ্বোধনের আগে একটি স্টলও সম্পূর্ণ করা গেল না কেন?
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র দু’দিনের নোটিসে এত আয়োজন করতে গিয়েই সমস্যা হয়েছে। এদিকে আজ অর্থাৎ সোমবার মেদিনীপুর শহরের কলেজিয়েট স্কুলের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির আসার কথা। তার আয়োজন করতে কয়েকদিন ধরেই হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। তার উপরে সংক্ষিপ্ত নোটিসে প্রদর্শনী করতে গিয়ে ভাবনা-চিন্তার বিশেষ সময় পাওয়া যায়নি। তবে দু’তিন দিনের মধ্যে প্রদর্শনীটি জমিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে বলে প্রশাসনিক কর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন।
মেলার উদ্বোধন করতে এসেছিলেন পশ্চিমাঞ্চলের আইজি সিদ্ধিনাথ গুপ্তা। তিনি বলেন, “গত দু’বছরে কোনও মাওবাদী হিংসার ঘটনা ঘটেনি। আমরা তা মোকাবিলা করতে পেরেছি। ৪০ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে। মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। জঙ্গলমহলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। ২০ হাজার স্থায়ী ও অস্থায়ী পদে নিয়োগ হয়েছে। ২৫ হাজার সিভিল ভলান্টিয়ার ফোর্স নিয়োগ হয়েছে। ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যানে উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। যে সব গ্রামে কিছুই ছিল না, সেখানেও উন্নয়ন হয়েছে।” উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী, ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সুপার ভারতী ঘোষ-সহ প্রশাসনিক কর্তারাও। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জেলাশাসক বলেন, “রাজ্য সরকার দু’বছরে কী উন্নয়ন করেছে তারই প্রদর্শনী হিসাবে মেলার আয়োজন।”
|
|
|
চলছে সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান। |
পুলিশের স্টল ঘুরে দেখলেন
আইজি পশ্চিমাঞ্চল। |
|
মেলায় প্রতিদিনই আলোচনাসভার আয়োজন থাকবে। এক-একদিন এক-একটি দফতর তাদের কাজ সম্পর্কে আলোচনা করবে। সংশ্লিষ্ট দফতর কী কাজ করে, কী ভাবে সাধারণ মানুষ তার সুবিধে পাবেএসব নিয়েই আলোচনা। তার সঙ্গে প্রতিদিনই থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
খরচ কত হবে?
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার রাজ্য সরকার ১০ লক্ষের মধ্যে প্রদর্শনীর খরচ আটকে রাখতে বলেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রদর্শনীর জন্য ওই টাকা দেবে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর। কিন্তু ১৭ দিনের প্রদর্শনীতে তা কী সম্ভব? এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, “ওই টাকায় তো সম্ভব নয়। স্টল তৈরি, ফ্লেক্স বানানো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অনুষ্ঠানে লোকজন নিয়ে আসাএসব করতেই অনেক খরচ। শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াবে তা আগে থেকে বলা কঠিন।”
এ দিন মেলাস্থলে সরকারি কর্মী-আধিকারিকরাই ছিলেন মূলত। কিন্তু যেখানে মুখ্য উদ্দেশ্য সরকারের কাজের প্রচার সেখানে মানুষের জমায়েত না হলে প্রচার হবে কী করে? প্রশাসনিক কর্তাদের সব চেয়ে বড় দুশ্চিন্তা এখন এটাই। এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, “প্রতিটি দফতরকেই বলে দেওয়া হয়েছে, তাদের কাজের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে মেলায় নিয়ে আসতে। বিশেষত, আলোচনা সভার সময় যেন ঘর ভরে থাকে।”
হাজিরা দেওয়ার এই ‘ফতোয়া’তে কাজ কতটা হবে, তা নিয়ে সংশয়ে প্রশাসনের কর্তারাই। |
ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
|
|
|
|
|