|
|
|
|
কাঠগড়ায় নীতীশ |
প্রচারের হাতিয়ার ‘তিসরি কসম’ |
স্বপন সরকার • পটনা |
বিহার কী ছিল, বিহার কী হয়েছে!
মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার তাঁর সরকারের এই প্রচারে হাতিয়ার করেছেন ছয়ের দশকের বলিউডি ছবি ‘তিসরি কসম’-কেই। ফণীশ্বরনাথ রেণুর গল্প ও বাসু ভট্টাচার্যের চিত্রনাট্যে-পরিচালনায় একেবারেই বিহারের প্রেক্ষিতে তৈরি রাজ কপূর আর ওয়াহিদা রহমান অভিনীত এই ছবিটিতে ছিল সেকালের বিহার। আর তাঁর প্রেক্ষাপটেই নীতীশ তুলে ধরতে চান তাঁর আজকের বিহারকে। আর তার ফলেই কাঠগড়ায় নীতীশ। ছবির প্রযোজক, একদা আরার বাসিন্দা শৈলেন্দ্রর ছেলে কপিরাইট আইন ভঙ্গের জন্য নীতীশকে উকিলের
চিঠি ধরিয়েছেন, সঙ্গে ১৫ কোটি টাকার দাবিপত্র।
৫ মার্চ থেকে ১১৫টি ভ্যানের সাহায্যে প্রায় ২০০০ পঞ্চায়েত এলাকায় এই ছবি প্রদর্শন করছে রাজ্য সরকার। এই ছবি প্রদর্শণের মাঝে মাঝে দেখানো হচ্ছে আগের সেই বিহারকে। দেখানো হচ্ছে কী ভাবে বদলে গিয়েছে সমাজ জীবন। সে ক্ষেত্রে এই সরকারের সাফল্য কতটা। গরুর গাড়ি আজ কেউ ব্যবহার করে না। তা দিয়ে জীবন নির্বাহও করে না। ‘সজন রে ঝুট মাত বোল, খুদা কে পাস জানা হ্যায়। না হাতি হ্যায়, না ঘোড়ে। পয়দলই যানা হ্যায়।’ পয়দল আর যেতে হয়না বিহারে। গ্রামের রাস্তাতেও পিচ পড়েছে। বিদ্যুৎ এসেছে। মানুষের মধ্যে শিক্ষার হার বেড়েছে। বয়েল গাড়ির বদলে এসেছে বিলাসবহুল গাড়ি। হাতি বা ঘোড়ার খোঁজও কেউ করে না। এখন বিহারের মানুষের কাছে মোটর গাড়ি সহজলভ্য। ‘তিসরি কসম’-এর প্রেক্ষিতে পরিবর্তিত বিহারের ছবি তুলে ধরে বিহারের আরও উন্নয়নের নামে নীতীশের এই ‘চৌথি কসম’।
সবই ঠিক ছিল। কিন্তু প্রয়োজক শৈলেন্দ্রর ছোট ছেলে, দীনেশের চিঠিই বাদ সেধেছে। দীনেশের অভিযোগ, “বিহার সরকার কোনও অনুমতি ছাড়াই এই ছবি প্রদর্শন করছে। এই ছবির স্বত্তাধিকারী আমাদের পরিবার। মা, তিন ভাই এবং দুই বোন।” তিনি বলেন, “আদালতের রায়ে এই ছবির নেগেটিভের স্বত্তাধিকারী আমাদের পরিবারের ছ’জন। ফলে ছবি প্রদর্শনের আগে সরকারের বোঝা উচিত ছিল এর জন্য অনুমতির প্রয়োজন। বিহার সরকার তা করেনি।” তিনি বলেছেন, “এর জন্য ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে দাবি করছি।” চিঠির কপি দীনেশ কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী মনীশ তিওয়ারিকেও পাঠিয়েছেন। রাজ্য সরকারের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান সচিব ব্রজেশ মেহরোত্রা বলেন, “আমরা আগেও এমন ছবি প্রদর্শন করেছি। কিন্তু কখনও এই রকম সমস্যার সম্মুখীন হইনি।” ক্ষতিপূরণের প্রশ্নে তিনি বলেন,“আগে ছবি তৈরি করতে এত টাকার বাজেট লাগত না। সুতরাং সবটাই দেখতে হবে।” সরকারের তরফে আইনজীবীদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করা হচ্ছে।
আর নীতীশ হয়তো ‘পাঁচওয়া কসম’ নিয়ে নিয়েছেন, ‘আর কোনও দিন কোনও সিনেমায় হাত দেব না।’ |
|
|
|
|
|