|
|
|
|
কর্নাটক বিধানসভা |
বুথ-ফেরত সমীক্ষায় কংগ্রেসের পাল্লা ভারী |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
দক্ষিণের একমাত্র রাজ্যপাট সম্ভবত হাতছাড়াই হতে চলেছে বিজেপির। আজ কর্নাটক বিধানসভার ভোটগ্রহণের পর একাধিক বুথ-ফেরত সমীক্ষায় স্পষ্ট ইঙ্গিত, রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে কংগ্রেস। এমনকী একক সংখ্যাগরিষ্ঠতাও পেয়ে যেতে পারে তারা। আর সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছাকাছি আসন পেলে তারা ছোট দলগুলির সমর্থন নিয়ে সরকার গড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
২২৪ আসনের কর্নাটক বিধানসভার ২২৩টিতে আজ ভোটগ্রহণ হয়। এক প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে একটি আসনে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছে। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭০ শতাংশেরও বেশি। বল্লারি-সহ দু’একটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ছাড়া মোটের উপর ভোটপর্ব ছিল শান্তিপূর্ণ। ভোটের শেষ পর্যায়ে একাধিক বুথ-ফেরত সমীক্ষায় কর্নাটকের পরবর্তী বিধানসভার যে সম্ভাব্য ছবিটা উঠে আসছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেস একাই পেতে চলেছে একশোর বেশি আসন। গত বিধানসভায় তাদের আসন সংখ্যা ছিল ৮০। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য তাদের দরকার ১১৩টি আসন। উল্টো দিকে, শাসক দল বিজেপির আসন সংখ্যা গত বারের ১১০-এর থেকে এক ধাক্কায় পঞ্চাশের কাছাকাছি নেমে আসার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
বুথ-ফেরত সমীক্ষা যে নির্বাচনের ফলাফল হুবহু তুলে ধরে, এমন নয়। কিন্তু এর ফলে ভোটদাতাদের মনোভাবের একটা আভাস পাওয়া যায় বলে মনে করা হয়। তাই এই সমীক্ষার মান্যতা রয়েছে। |
|
ভোট দিলেন নব দম্পতিও। হুবলির একটি বুথে রবিবার। ছবি: পিটিআই |
আজ সিএনএন-আইবিএনের সমীক্ষা বলছে, ১০০ থেকে ১১৫টি আসন পেতে পারে কংগ্রেস। বিজেপি পেতে পারে ৪৩ থেকে ৫৩টি। সি-ভোটার-এর সমীক্ষা অনুযায়ী কংগ্রেস ১১৪টি এবং বিজেপি ৫৫টি আসন পেতে পারে। একই ভাবে নিউজ-২৪-এর সমীক্ষায় কংগ্রেসের ১৩২টি এবং বিজেপির ৩৮টি আসন পাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।
বিজেপির সম্ভাব্য বিপর্যয়ের অন্যতম প্রধান কারিগর হিসেবে অবশ্যই দেখা দিচ্ছেন দলত্যাগী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। এইচ ডি কুমারস্বামীর জেডিএস বাদ দিয়ে কর্নাটকের ‘অন্যান্য’ দল যে ১৫ থেকে ২৪টি আসন পাবে বলে অধিকাংশ সমীক্ষায় বলা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে ইয়েদুরাপ্পার ‘কর্নাটক জনতা পক্ষ’।
মূলত ইয়েদুরাপ্পার জন্যই বিধানসভা ভোটে তারা কতটা সুবিধে করতে উঠতে পারবে, তা নিয়ে গোড়া থেকেই সংশয়ী ছিল কর্নাটক বিজেপি। কারণ, একে তো ইয়েদুরাপ্পা দুর্নীতি-মামলায় জড়িয়েছেন। তার জেরে মুখ্যমন্ত্রী পদও ছাড়তে হয়েছে তাঁকে। এর পরেও দলকে লাগাতার বেগ দিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। এমনকী উত্তরসূরি সদানন্দ গৌড়াকে সরিয়ে নিজের ঘনিষ্ঠ জগদীশ শেট্টারকে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসাতে দলকে বাধ্য করেছেন। ইয়েদুরাপ্পা গদি ছাড়ার পর থেকেই বিজেপির আশঙ্কা ছিল, লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্কে হয়তো বড় ধস নামাবেন তিনি। শেষ পর্যন্ত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী একেবারে নতুন দল গড়ে ভোট ময়দানে নেমে পড়ায় সেই আশঙ্কাই সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা। ইয়েদুরাপ্পা আজ অবশ্য দাবি করেছেন, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তাঁরাই ক্ষমতায় আসতে চলেছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছিলেন, সরকার গড়ার ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন ইয়েদুরাপ্পা। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছাকাছি আসন পেলে তারা ইয়েদুরাপ্পার সমর্থন নেবে কি না, সেটাই এখন দেখার।
এ বারের ভোটে কংগ্রেসের সেই অর্থে কোনও ঘোষিত মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ছিল না। কর্নাটকে সভা করতে এসে যা নিয়ে কংগ্রেসকে কটাক্ষও করে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তা সত্ত্বেও রাজ্যে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়া কংগ্রেসের কাজ অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে। সার্বিক ভোটদানের হার বৃদ্ধি তারই প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬৪.৯১ শতাংশ। এ বারে তা ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
কংগ্রেসও লোকসভা ভোটের আগে এই রাজ্যে প্রচারে খামতি রাখেনি। সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহ, রাহুল গাঁধীরা ঝটিকা সফরে এসে সভা করেছেন কর্নাটকে। শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় এলে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়েই এখন চলেছে জোর জল্পনা। এ ক্ষেত্রে কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি জি পরমেশ্বরের নাম যেমন উঠে আসছে, তেমনই উঠছে বর্তমান বিরোধী দলনেতা সিদ্ধারামাইয়ার নাম। আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলিকে রাজ্যের মানুষ মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চান বলেও একটি সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে। তবে মোটের ওপর কংগ্রেস নেতৃত্ব আপাতত এই ভেবেই আত্মবিশ্বাসী যে, সাধারণ মানুষ তাঁদের পাশে রয়েছেন। তাঁরা এখন তাকিয়ে ৮ মে-র দিকে। সে দিন ভোটগণনার পরে অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যাবে চূড়ান্ত সমীকরণ।
|
কর্নাটকের লড়াই |
|
|
|
সিএনএন |
১০০ |
৪৩ |
আইবিএন |
১১৫ |
৫৩ |
সি-ভোটার |
১১৪ |
৫৫ |
নিউজ ২৪ |
১৩২ |
৩৮ |
* বুথ ফেরত সমীক্ষা |
|
|
|
|
|
|