|
|
|
|
বনশল ভোটে জেতার পরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি সিঙ্গলাকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
তাঁর সাত বোন। তাদের সন্তান-সন্ততির সংখ্যাও নেহাত কম নয়। কিন্তু সবচেয়ে ছোট বোনের (যিনি কিছু দিন আগে মারা গিয়েছেন) ছেলে বিজয় সিঙ্গলাকেই নাকি পুত্রবৎ স্নেহ করতেন মামা পবন বনশল। বিরোধীদের অভিযোগ, বনশলের রাজনৈতিক উত্থানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সিঙ্গলার রাজ্যপাট।
চণ্ডীগড়ের অভিজাত বাণিজ্যিক সার্কিটে বিজয় এবং তাঁর ছোট ভাই মহিন্দর সিঙ্গলার আবির্ভাব ধূমকেতুর মতো। মহিন্দর অবশ্য নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন চণ্ডীগড়ের সড়ক নির্মাণ ব্যবসায়। বড় ভাই বিজয় শাখা ছড়িয়েছেন বিভিন্ন দিকে। খুচরো ব্যবসা থেকে জমি বেচাকেনা, প্যাকেজিং থেকে সিমেন্ট কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ইস্পাত বাদ ছিল না কোনওটাই। মাত্র বছর বারো আগেও যিনি থাকতেন পঞ্চকুলা-র ভাড়াবাড়িতে, সেই বিজয় সিঙ্গলা সম্প্রতি চণ্ডীগড়ের শিল্প তালুকে একশো কোটি টাকায় জমি নিয়েছিলেন। সেই জমিতে প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ‘অ্যাক্রোপলিস’ নামে একটা শপিং মল বানানোর কাজ শুরু হয় কয়েক মাস আগে। এ ছাড়াও তাঁর সাম্প্রতিক কেনাকাটার মধ্যে রয়েছে চণ্ডীগড় থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ডেরা বাসসি এলাকায় আবাসন প্রকল্পের জন্য ১০০ একর জমি, চণ্ডীগড় সীমানায় জিরাকপুরে স্কুল গড়ার জন্য ৩০ একর জমি। বিরোধীদের দাবি, বনশলের প্রভাব কাজে লাগিয়েই সিঙ্গলার এই সমস্ত শিল্প উদ্যোগ। বনশল যে মন্ত্রকে থেকেছেন, সেই মন্ত্রককেই কাজে লাগানোর অভিযোগ উঠেছে সিঙ্গলার বিরুদ্ধে। স্থানীয় কংগ্রেস সূত্রের খবর, চণ্ডীগড়ের শিল্প কমপ্লেক্সে বনশলের সঙ্গে শিল্পপতিদের নিয়মিত বৈঠকের আয়োজন করতেন সিঙ্গলা-ই। |
|
গ্রেফতার হওয়ার পরে বিজয় সিঙ্গলা। শনিবার। ছবি: পিটিআই |
সর্বজনসমক্ষে খুব একটা আসতেন না সিঙ্গলা। কিন্তু মামার নির্বাচনী ক্ষেত্র চণ্ডীগড়ের দেখভাল তিনিই করতেন বলে রাজনৈতিক সূত্রের খবর। ভোটের সময় প্রচারে সাহায্য করা, পুঁজির জোগাড় করার কাজে তাঁকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রকের কাছে যে নথি রয়েছে, তাতে সাতটি সংস্থার ডিরেক্টরের পদে রয়েছেন বিজয় সিঙ্গলা। সেগুলি হল, জেটিএল ইনফ্রা লিমিটেড, জগন ইন্ডাস্ট্রিজ, হিমানি স্টিল প্রাইভেট লিমিটেড, চেতন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, জগন রিলেটরস প্রাইভেট লিমিটেড, এমভিএম মেটাল অ্যান্ড অ্যালয় লিমিটেড এবং রেডিয়ান ফেরোমেটালস প্রাইভেট লিমিটেড। ১৯৯০ সালের জানুয়ারি মাসে চণ্ডীগড় থেকে যখন লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন পবন, তখনই সিঙ্গলার মূল সংস্থা জগন ইন্ডাস্ট্রিজ খোলা হয়। ১৯৯১ সালে বনশল জিতলেন। তারপর থেকে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি সিঙ্গলাকে।
বনশল রেলের দায়িত্ব পাওয়ার পর সিঙ্গলার রেল ভবনে যাতায়াত বেড়ে যায়। বিরোধীদের অভিযোগ, রেলের বিভিন্ন ঠিকাদারির কাজের সিংহভাগ বরাত পেতেন তিনি। সম্প্রতি রেলে পানীয় জল সরবরাহের দায়িত্বও পান সিঙ্গলা, যার পিছনে বনশলের হাত রয়েছে বলে একাংশের মত। পাশাপাশি বিভিন্ন নিয়োগ এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রেও তাঁর যথেষ্ট ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ। বিরোধীদের দাবি, রেল বোর্ডের সদস্য মহেশ কুমারের ঘুষ-কাণ্ড তারই নমুনা। |
|
|
|
|
|