মেট্রো চ্যানেলের পরে এ বার শ্যামবাজারে রাজনৈতিক সভার অনুমতি দেওয়া নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠল পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
সারদা-কাণ্ড নিয়ে বিরোধীদের প্রচারের জবাব দিতে গত ২ মে শ্যামবাজারে সভা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই শ্যামবাজারেই কাল, মঙ্গলবার গৌতম দেব, মহম্মদ সেলিমদের নিয়ে পাল্টা জনসভার কর্মসূচি নিয়েছিল বামফ্রন্ট। কিন্তু পুলিশ প্রথমে রাজি হয়েও পরে ওই সভার অনুমতি দেয়নি বলে রবিবার অভিযোগ করেছেন সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক রঘুনাথ কুশারী। আর গৌতমবাবু জানিয়েছেন, অনুমতি না পেলেও তাঁরা মঙ্গলবার ওখানে সভা করবেনই।
সিপিএমের কলকাতা জেলা নেতৃত্বের বক্তব্য, শ্যামবাজারে সভা করতে চেয়ে গত শুক্রবার শ্যামপুকুর থানায় আবেদন জানানো হয়েছিল দলের তরফে। প্রথমে ৮ মে সভা করতে চাইলেও সেই দিন ওখানে অন্য কর্মসূচি আছে বলে পুলিশ জানানোর পরেই ৭ তারিখের জন্য আবেদন করা হয়। পুলিশের কাছ থেকে সভার অনুমতিও মেলে। কিন্তু শনিবার পুলিশ সিপিএম নেতৃত্বকে জানায়, মঙ্গলবার শ্যামবাজারে তাঁদের সভা করতে দেওয়া যাবে না। শ্যামপুকুর থানা থেকে এ দিন রঘুনাথবাবুকে ওই মর্মে একটি ই মেল-ও পাঠানো হয়েছে। যার নির্যাস রবিবার থেকে ২০ মে পর্যন্ত ওই অঞ্চল কলকাতা পুরসভার অনুষ্ঠানের জন্য দেওয়া আছে। তাই মঙ্গলবার সিপিএমকে সেখানে সভা করতে দেওয়া যাবে না।
গোটা ঘটনাটিকে সরকারের ‘অগণতান্ত্রিক এবং স্বেচ্ছাচারী’ মনোভাবের প্রকাশ বলে অভিহিত করে রঘুনাথবাবু এ দিন বলেন, “পুলিশ অনুমতি না দিলেও নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত জায়গায় সভা আমরা করবই।” সিপিএম নেতা মানব মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “শ্যামবাজারে কংগ্রেস এবং সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর দলকে কর্মসূচি করতে দেওয়া হল। অথচ সিপিএমের বেলায় দেওয়া হচ্ছে না! বোঝাই যাচ্ছে, প্রধান বিরোধী দলের বক্তব্য শাসকের পক্ষে অস্বস্তিকর!” তবে সিপিএমের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) গৌরব শর্মা বলেছেন, “ওখানে কলকাতা পুরসভার অনুষ্ঠান আছে। তাই ওই দিন ওখানে অন্য সভার অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না।”
মানববাবু জানিয়েছেন, তিনি শনিবার এবং এ দিন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্যামবাজার অঞ্চলেই বিকল্প জায়গায় সভা করতে চেয়েছেন। কিন্তু সদুত্তর মেলেনি। মেট্রো চ্যানেলে শাসক দল ছাড়া অন্য কাউকে সভা করতে না দেওয়ার রেওয়াজ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মানববাবু। কিন্তু পুলিশের অনুমতি ছাড়া সভা করলে কি সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকে না?
মানবাবুর জবাব, “গত দু’ বছরে পুলিশের সঙ্গে আমাদের ক’টা সংঘর্ষ হয়েছে? আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে সভা করতে চাই। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত পুলিশের। আমরা তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছি। কিন্তু তারা কী চায় বা করবে, তা জানি না। সুদীপ্ত গুপ্ত তো পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ করতে বাসে ওঠেনি!” তবে এর পরেও পরবর্তী দু’দিনে পুলিশের কাছ থেকে ‘ইতিবাচক’ সাড়া পাওয়া যায় কি না, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে সিপিএম। |