তাঁর নির্মাণ সংস্থায় বাড়ি তৈরির কাজে লাগে অ্যাম্বুল্যান্স। সেবি-র প্রশ্নের উত্তরে এমনই জানানো হয়েছিল সারদা গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে। তথ্য পেয়ে চোখ কপালে উঠেছিল সেবি কর্তাদের।
তদন্তকারীদের প্রশ্নের জবাবে সারদার পক্ষে প্রথমে জানানো হয়েছিল, তারা সাধারণের কাছ থেকে নগদ টাকা তোলে না। নির্মাণ সংস্থা হিসেবে তারা ফ্ল্যাট, জমি বিক্রি করে। কোথায় কোথায় কী ভাবে সেই ‘রিয়েল এস্টেট’-এর কাজ চলছে এবং তাতে কী ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে তা বিস্তারিত জানতে চেয়েছিল সেবি। তার উত্তরেই সারদার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, আবাসন তৈরির কাজে অ্যাম্বুল্যান্স ও ট্রাক মিলিয়ে মোট ৯৭টি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। এর প্রমাণ দিতে গিয়ে একশোরও বেশি পেটি বোঝাই নথি পাঠিয়েছিল সারদা গোষ্ঠী। পশ্চিমবঙ্গ-অসম-দিল্লি-মহারাষ্ট্র এমনকী ত্রিপুরাতেও সারদার বেশ কিছু জমি ও সম্পত্তি আছে বলে জেনেছিল সেবি। ওই সব সম্পত্তি দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলা হত বলে সেবি জানতে পারে। কিন্তু এই সব সম্পত্তির কোনও কাগজপত্র সেবি-কে জমা দেয়নি সারদা গোষ্ঠী।
গত ১ এপ্রিল সেবির কাছে দোষ স্বীকার করে চিঠি পাঠিয়েছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। ওই চিঠিতে তিনি কবুল করেছিলেন, তাঁর সংস্থা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর সংস্থার নামে তোলা বহু টাকা কর্মী ও এজেন্টরা আত্মসাৎ করেছেন বলেও তিনি ওই চিঠিতে জানান। সংস্থার কিছু কর্মী ও এজেন্ট সংস্থার সফ্টওয়্যার নিয়ন্ত্রণ করে প্রতারণা করেছেন বলে দাবি করেন সুদীপ্ত। আদালতের কাছে হলফনামায় এই চিঠির কথা জানিয়েছে সেবি।
২৩ এপ্রিল সুদীপ্ত ও সংস্থার আইনজীবীকে নোটিস দিয়ে সেবি জানায়, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সেবির তদন্তের প্রেক্ষিতে এ ধরনের কোনও অভিযোগ করেননি সুদীপ্ত। মার্চ মাসের পরে হঠাৎই নিজের সংস্থার কর্মী, এজেন্টদের দায়ী করে কেন এমন অভিযোগ করছেন, খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ যদি সত্যিও হয়, তবুও নিজের সংস্থার কর্মী ও এজেন্টের প্রতারণার দায় এড়াতে পারেন না সুদীপ্ত। কারণ তিনি সংস্থার কর্তা।
সুদীপ্তের সম্পত্তি নিয়ে সেবি-র রিপোর্ট ধরে সারদার সম্পত্তির খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। এ জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সংস্থা কয়েকজন পদস্থ কর্মীদেরও। |