বিদ্যুতের বিল বেড়ে দ্বিগুণ,
কালনায় কোপ ত্রিফলায়
বিপুল টাকা বিল এসেছে বিদ্যুতের। তাই উৎসবের দিন ছাড়া বছরের অন্য সময়ে রাস্তায় ত্রিফলা আলো না জ্বালানোর সিদ্ধান্ত নিল কালনা পুরসভা। বিদ্যুতের বিল কমাতে আরও কিছু পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার আলো জ্বালানো, পাম্প চালানো-সহ নানা প্রয়োজনে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়, তার বিল আসে বাণিজ্যিক হারে। এ জন্য মোটা টাকা রাখতে হয়। মার্চে স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বিল আসায় বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। অন্য মাসে যেখানে বিল আসে আট-সাড়ে আট লক্ষ টাকা, ওই মাসে সেখানে বিল এসেছে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা।
পুরসভার দাবি, এত টাকা বিল কী ভাবে হল, তা নিয়ে খোঁজখবর করতে গিয়ে জানা যায়, প্রচুর বিদ্যুৎ চুরি গিয়েছে। শহরের ২, ১৩, ১৪ ইত্যাদি ওয়ার্ডে এই চুরি বেশি হয়েছে। এ ছাড়াও জানা যায়, পুরসভার কিছু প্রাক্তন কর্মীর পরিবারও পুরসভার ঘর দখল করে বেআইনি ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। ২ নম্বর ওয়ার্ডে পুরভবনের কাছেও বহু অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর পরিবার এই কাজ করছে বলে জানা যায়। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই প্রাক্তন কর্মীরা অবসরকালীন সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ফেলেছেন। তা সত্ত্বেও বহু পরিবার ঘর ছাড়েননি। নোটিস পাঠিয়েও কোনও ফল হয়নি বলে তাঁদের দাবি। ফলে, ওই সব পরিবারগুলি যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন তার বিল মেটাতে হচ্ছে পুরসভাকেই।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের বিল কমাতে কোপ পড়ছে শহরের সৌন্দর্যায়নের জন্য লাগানো ত্রিফলা বাতির উপরে। মাস আটেক আগে এই বাতিগুলি লাগানো হয়েছিল ১৮, ৪, ১২, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে। পুরপ্রধান বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, “পুরসভার বিদ্যুতের তার থেকে হুক করে বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে। তার জেরে মাত্রাতিরিক্ত বিল আসছে। এই বিলের চাপ কমাতে আপাতত সাধারণ দিনে ত্রিফলা আলো জ্বালানো হবে।” তবে তিনি বলেন, “তবে উৎসবের সময়ে শহরের রাস্তায় মানুষের ঢল নামে। যে কোনও উৎসবের দু’দিন আগে এবং পরে এই বাতি জ্বালানো হবে।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিষমর্দিনী পুজো, সরস্বতী পুজো, দুর্গাপুজোর সময়ে ত্রিফলা জ্বলবে শহরে। পুরপ্রধানের আশ্বাস, “ভবিষ্যতে বিদুত্যের বিল কমানো গেলে ফের সাধারণ দিনেও ত্রিফলা জ্বালা হবে।” তাঁর দাবি, পুরসভাকে যাতে বাণিজ্যিক হারের বদলে সাধারণ হারে বিল পাঠানো হয়, সেই আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হবে।
বিদ্যুৎ চুরি রুখতে কেব্ল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান বিশ্বজিৎবাবু। পুরসভার আলো বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর আনন্দ দত্তের কথায়, “শহরের বিদ্যুৎ দফতর যে তারগুলির মাধ্যমে সংযোগ দেয়, তার নীচের অংশের তার থেকে সংযোগ পায় পুরসভা। ওই উচ্চতা থেকে বিদ্যুৎ চুরি করা সহজ। পুরসভার তারটি উপরের দিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়াও চুরি ঠেকাতে বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে পুরসভার যৌথ অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।” তিনি জানান, আলো জ্বালানো যে কর্মীদের দায়িত্ব তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ আলো নিভিয়ে দিতে হবে। আনন্দবাবুর দাবি, আগে সকাল ৭টাতেও আলো জ্বলতে দেখা যেত। নতুন নির্দেশে বিদ্যুৎ বাঁচবে বলেই তাঁদের আশা।
পুরসভার আশ্বাস, শহরের প্রতি ওয়ার্ডের রাস্তাতেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকায় ত্রিফলা না জ্বালা হলেও আলোর অভাব হবে না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.