শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় হাজার খানেক বাড়ি। প্রাথমিক ভাবে তালিকা তৈরির পরে এমনটাই জানাল দুর্গাপুর পুরসভা। শনিবার সন্ধ্যায় ওই শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল দিয়ে সাহায্য করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মহকুমা প্রশাসনও। রবিবার মহকুমাশাসক আয়েষারানি আহমেদ নিজে নানা এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি বলেন, “যাঁদের বাড়ির চালের বেশি ক্ষতি হয়েছে, আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে তাঁদের ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। সবিস্তার রিপোর্ট পেলে তা জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে সাহায্য চাওয়া হবে।” রবিবার সন্ধ্যায় প্রবল ঝড়ে কাঁকসার মোবারকগঞ্জে বেশ কয়েকটি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। |
শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ হঠাৎ শিলাবৃষ্টি শুরু হয় দুর্গাপুরে। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া ও অল্প বৃষ্টি। এর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শহরের বেশ কিছু এলাকার ঘরবাড়ি। শহরের ধোবীঘাট, রঘুনাথপুর, কালিপুর, অঙ্গদপুর প্রভৃতি এলাকায় বৃষ্টির তীব্রতা ছিল বেশি। এই সব এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি ছিল। রাস্তা বা খোলা জায়গায় রাখা বহু গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। অনেক বাড়ির ছাদে প্লাস্টিকের জলের ট্যাঙ্কও ফেটে যায়। বিভিন্ন কারখানার অ্যাসবেস্টসের ছাউনিও ফুটো হয়ে গিয়েছে। হানিম্যান সরণির পাশে একটি বেসরকারি ওষুধ কারখানার গুদাম, সাইকেল স্ট্যান্ডের ছাউনি নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
রবিবার সকাল থেকেই শুরু হয় ওই ক্ষতিগ্রস্ত কারখানায় মেরামতির কাজ। তবে মূল কারখানার ছাদ নষ্ট না হওয়ায় উৎপাদনে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, সিধো-কানহু ইন্ডোর স্টেডিয়ামের অ্যাসবেস্টস দিয়ে তৈরি ছাদও ফুটো হয়ে গিয়েছে। দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হবে। শহর ছাড়িয়ে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের কালিকাপুর, নাচন ইত্যাদি গ্রামেও শিলাবৃষ্টির তীব্রতা ছিল বেশি। শিলের ঘায়ে সেখানকার খেতের শসা, ঝিঙে, লাউ, কুমড়ো, উচ্ছে, পাট শাক, তিল প্রভৃতি ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে চাষিদের দাবি। কৃষি দফতর সূত্রেও জানানো হয়েছে, শিলের আঘাতে অনেক গাছের মাথা ভেঙে গিয়েছে। ফলে উৎপাদন মার খাবে। |
রবিবার সকাল থেকেই স্থানীয় কাউন্সিলরদের মাধ্যমে এলাকায় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করে পুরসভা। পরে প্রায় হাজার খানেক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা পুরসভার পক্ষ থেকে জমা দেওয়া হয়েছে মহকুমা প্রশাসনের কাছে। মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “অনেকেরই টালির চাল ভেঙে গিয়েছে। অ্যাসবেস্টসের চালও ফুটো হয়ে গিয়েছে। ঘরের ভিতরে রোদ ঢুকছে। বৃষ্টি হলে জল ঢুকবে।” প্রাক্তন বিধায়ক ও মেয়র পারিষদ বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীও বলেন, “বস্তি এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি। মহকুমা প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি।” মহকুমাশাসক জানান, পুরসভার দেওয়া তালিকার পাশাপাশি প্রশাসনের বিশেষ দলও এলাকায় এলাকায় ঘুরে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছে। |