|
|
|
|
প্রহৃত কংগ্রেস নেতাও |
স্কুলে হামলায় গ্রেফতার ৩ তৃণমূল কর্মী, দলে দ্বন্দ্ব
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
স্কুলের উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক চলাকালীন হামলা চালিয়ে প্রধান শিক্ষক, সম্পাদক-সহ চার জনকে মারধর, হেনস্থা ও আসবাব ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল এক দল তৃণমূল সমর্থকের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের সামসাবাদ ধান্যখোলা হাইস্কুলের ওই ঘটনায় শনিবার পুলিশ শনিবার তিন তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করেছে।
এ দিন সকালেই আবার নন্দীগ্রামের মহম্মদপুরে কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি মুকলেসুর মল্লিককে তৃণমূলের লোকজন মারধর করে বলে অভিযোগ। তাঁকে নন্দীগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযোগ দায়ের হয়েছে শেখ মুরসেলিন ও শেখ হারুন নামে দুই তৃণমূল সমর্থকের নামে। স্থনীয় সূত্রের খবর, গ্রামের কোথায় নলকূপ বসবে তা নিয়েই কংগ্রেস-তৃণমূল বচসা বেধেছিল। নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তাহের অবশ্য দাবি করেন, “এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। পুরনো গোলমালের জেরেই এই ঘটনা।”
সামসাবাদ ধান্যখোলা হাইস্কুলে গণ্ডগোলের ঘটনায় কিন্তু নন্দীগ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই ফের প্রকাশ্যে এসেছে বলে অভিযোগ। হামলায় জড়িতেরা তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শেখ সুফিয়ানের অনুগামী বলে পরিচিত। শেখ সুফিয়ান অবশ্য তাঁর অনুগামীদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরা অভিভাবক হিসেবে গত কাল স্কুলের বৈঠকে গিয়েছিলেন। |
মুকলেসুর মল্লিক।—নিজস্ব চিত্র। |
বৈঠকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিড-ডে মিল, ছাত্র-ছাত্রীদের পোশাক দেওয়ার টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তখন তাঁদের মারধর করা হয়। এই ঘটনায় দলেরই স্থানীয় নেতা শাহ আলম ও জেলা পরিষদ সদস্য পীযূষ ভূঁইয়ার অনুগামীরা জড়িত।” সুফিয়ান-বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা তথা নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আবু তাহেরের অনুগামী বলে পরিচিত পীযূষ ভূঁইয়া, শাহ আলম, আবু তাহেররা জানান, সামসাবাদের ওই স্কুলে অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক চলাকালীন প্রধান শিক্ষক ও সম্পাদককে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। এই ঘটনায় দলেরই কিছু লোক জড়িত বলে অভিযোগ এসেছে।
পুলিশ ও স্কুল সূত্রের খবর, ধান্যখোলা বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন, উন্নয়ন ও নিয়মশঙ্খলা নিয়ে শুক্রবার বিকেলে অভিভাবকদের নিয়ে বিদ্যালয়েরই এক ঘরে বৈঠক চলছিল। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ প্রায় ৪০-৫০ জন তৃণমূল সমর্থক আচমকা সেখানে ঢুকে স্কুল-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তোলে। সেই সময় কয়েক জন প্রতিবাদ করতেই তাঁরা আক্রমণ শুরু করেন বলে অভিযোগ। তখনই তাঁরা স্কুলের চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ভাঙচুর করে ও প্রধান শিক্ষক প্রদীপ মাইতি, তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত পরিচালন সমিতির সম্পাদক সুনীল মাইতি, সদস্য সানোয়ার আলি, কর্মী বিশ্বজিৎ শীট-সহ কয়েক জন অভিভাবককে মারধর করেন বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্কুল চত্বরে উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলায় জড়িত ১৩ জনের বিরুদ্ধে রাতেই নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রধান শিক্ষক। শনিবার দুপুরে পুলিশ শেখ খোকন, অতনু জানা, শেখ আমিরুল নামে তিন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপকুমার মাইতি বলেন, “স্কুলে অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক চলছিল। আচমকা এক দল লোক এসে আমাদের উপর ও এমনকি অভিভাবকদের উপর আক্রমণ চালায়। আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। আমাদের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।” পরিচালন সমিতির সম্পাদক সুনীলকুমার মাইতি বলেন, “এ দিন হামলার ঘটনায় দলেরই এক গোষ্ঠীর লোকজন জড়িত। দলের উচ্চ নেতৃত্বকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।” |
|
|
|
|
|