প্রচণ্ড গরমে নদী, পুকুর, কুয়োর জল কার্যত শুকিয়ে গিয়েছে। জলর স্তর নেমে যাওয়ায় অকেজো হয়ে পড়েছে এক হাজারের বেশি নলকূপ। পরিস্থিতির জেরে মালদহ জেলার পুরাতন মালদহ, গাজল, হবিবপুর, বামনগোলা এলাকায় পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জল সঙ্কটের কারণে জেলায় আমের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষি এবং ব্যবসায়ীরা। গরমের এই পরিস্থিতি সামলাতে আগামী ৪ মে জরুরি বৈঠক ডেকেছে জেলাপ্রশাসন। বৃহস্পতিবার জেলার তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করেছে। দাবদাহ রয়েছে উত্তরদিনাজপুরেও। রায়গঞ্জ মোহনবাটী হাইস্কুলের আবহাওয়া বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী তথা মালদহের বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “জেলা জুড়ে ব্যাপক পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ছোট নদী, পুকুরগুলিও শুকিয়ে গিয়েছে। জলস্তর নেমে গিয়েছে। জল সঙ্কটের মোকাবিলায় আগামী শনিবার জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সমস্যা মেটাতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দুপুরে গরম হাওয়া বইতে শুরু করায় সুনসান হয়ে পড়ছে মালদহ এবং রায়গঞ্জ শহরের রাস্তাঘাট। মালদহ জেলা কৃষি দফতরের উপ অধিকর্তা সজল ঘোষ বলেন, “বৃহস্পতিবার মালদহে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যে রকম গরম হাওয়া বইছে তাতে বাইরে বার হওয়া মুশকিল হচ্ছে।” মোহনবাটী হাইস্কুলের আবহাওয়া বিভাগের প্রধান বিশ্বজিৎ সরকার জানান, এ দিন জেলায় আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৫৫ শতাংশ। আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যাওয়ায় গরম বেশি অনুভূত হয়েছে। জেলাশাসক গোদালাকিরণ কুমার বলেন, “গরমে জেলাজুড়ে চরম পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। নদী, পুকুর, কুয়োর জল প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে। প্রচুর নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। জলের সংকট মেটাতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে ৯১৬টি নলকূপ বসানোর অনুরোধ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে।” আম চাষিরা জানান, জলের অভাবে গাছ থেকে আম ঝড়ে পড়ছে। জেলার খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং উদ্যান পালন দফতরের-সহ উপ অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী বলেন, “জেলায় ২৮৫০০ হেক্টর আমবাগানের মধ্যে মাত্র ৪৭ শতাংশ সেচযোগ্য। যারা সেচ দিতে পারছেন না তাদের গাছের আম ঝরতে শুরু করেছে।” |