গোটা ভারত আর ভারতের বাইরেও আমাদের যে লক্ষ লক্ষ সমর্থক আইপিএল দেখছেন, তাঁদের বোঝানো খুব কঠিন কেকেআরের হয়ে মাঠে নামা এগারো জন ক্রিকেটার এই ফ্র্যাঞ্চাইজির কী ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটা অংশ! আর সেটাই আমার সবচেয়ে বড় আফসোস এ বারের আইপিএলটা আমাদের কাছে একেবারে অন্য চেহারায় এসে হাজির হওয়ার পিছনে।
কেকেআরকে সফল করে তোলার জন্য বছরভর কয়েকশো, এমনকী হয়তো কয়েক হাজারও মানুষ হবেন, যাঁরা নিরন্তর পরিশ্রম করে চলেছেন। এবং আমাদের প্রতিটা হারে সেই মানুষগুলোর স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হচ্ছে। ওঁদের কাছে এটা কোনও সান্ত্বনাই হতে পারে না যদি এর পরে আমরা কেকেআর ক্রিকেটাররা বলি, ভাই, আমরা নিজেদের সেরা চেষ্টাটা করছি!
আমাদের ট্রেনিং আর প্রস্তুতি সচরাচর যেমন হয়, তেমনই অসাধারণ হয়েছে। পর্দার অন্তরালে থাকা কর্মীরা এবং ম্যানেজমেন্ট তাদের নিজেদের কাজ করেছে। আমরাই মাঠে গিয়ে রেজাল্ট দিতে পারছি না। অনেক রকম ভাবেই মনে হতে পারে যে, আমরা গত মরসুমের মতোই খেলছি। কিন্তু সেটা সত্যি নয়। মাত্র কয়েক শতাংশের এ দিক-ও দিক পারফরম্যান্স লাগে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ থেকে সবার নীচে নেমে আসতে। আমাদের টিমের কয়েক জন সিনিয়র গত বারের মতো খেলতে পারছে না। স্বভাবতই সেই দলে আমিও পড়ছি। গোটা কয়েক ভাল ম্যাচ যদি খেলে থাকি, তা হলে কয়েকটা ম্যাচ খারাপও খেলেছি। খেলায় ধারাবাহিকতা হল সবচেয়ে কাঙ্খিত বস্তু। যার অবশ্যই এ বছর আমি নিজের খেলায় খোঁজ পাইনি।
দিল্লি ডেয়ারডেভিলস যখন ওদের প্রথম সাতটা ম্যাচ হেরেছিল, ওদের ডাগআউটের তখনকার অবস্থা কী ছিল সেটা আমি এখন বিলক্ষণ টের পাচ্ছি। দু’দিন আগেই বলেছিলাম, দিল্লির ওই রকম একটা অবস্থা হওয়ার মতো টিম ওরা মোটেই নয়। সে জন্য আরও দেখে ভাল লাগল যে, একটা হেরো দলও কয়েকটা জয় পেলে তাদের স্পিরিটটা কেমন লাফিয়ে বেড়ে ওঠে।
আমিও ওই রকম কেকেআর স্টাফ আর ফ্যানদের স্পিরিট বেড়ে ওঠার মতো কিছু করে টুর্নামেন্টটা শেষ করতে চাই। কিছু দিন ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম নিতে যাওয়ার আগে। যে দলের হয়েই আমি খেলি সম্পূর্ণ ভাবে তাদের প্রতি দায়বদ্ধ থাকি। সেটাই আমার একমাত্র পরিচয়। কে বলতে পারে, আমরা যদি আমাদের বাকি সব ম্যাচ জিতি, তা হলে এমন একটা অঙ্কের হিসেব তৈরি হল যেটা কেকেআরের প্লে অফে ওঠায় সাহায্য করবে না?
আমার বয়স আর ক্রিকেটজীবনের এই সময় মাঠের বাইরেরও অনেক ব্যাপার মাথায় রাখতে হয়। নিজের সেরাটা খেলতে কিছু পরিকল্পনা আর গোছগাছের দরকার পড়ে। সম্পূর্ণ মনোযোগ ছাড়া স্রেফ ক্রিকেটের টানে ভেসে গিয়ে টানা খেলা আমার পক্ষে এখনকার বয়সে অসম্ভব। সে জন্য পরের মাসেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দক্ষিণ আফ্রিকা দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছি। না হলে ব্যাপারটা অন্যায্য হত। ২০১৫ বিশ্বকাপ খেলার আকাঙ্খা আমি কিন্তু ছাড়িনি। তবে এই মুহূর্তে আমার অগ্রাধিকার তালিকায় সবার উপরে কেকেআরের হয়ে খুব ভাল খেলে শেষ করা। তার পরে সময় হাতে নিয়ে পরবর্তী ভাবনা।
|
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে সরে দাঁড়ালেন জাক কালিস। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান নির্বাচক অ্যান্ড্রু হাডসন জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় তাঁকে দলে না রাখার অনুরোধ করেছিলেন কালিস। সেই অনুরোধই রাখা হল। এই ঘটনার পরই ওয়ান ডে ক্রিকেটে কালিসের ভবিষ্যৎ নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি হাডসন। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে শেষ ওয়ান ডে খেলা কালিস কয়েক দিন আগে আনন্দবাজারে নিজের কলামে লিখেছিলেন, ২০১৫ বিশ্বকাপে খেলতে চান। গত রবিবারও হাডসন বলেছিলেন, “কালিস সুস্থ ও দলে আসার জন্য তৈরি।” অথচ মাত্র চার দিনের মধ্যেই ছবিটা পুরো পাল্টে যাওয়ায় অবাক অনেকেই। কালিস না থাকলেও চোট সারিয়ে দলে ফিরলেন জে পি দুমিনি ও ফাফ দু’প্লেসি। দলের নেতৃত্বে বহাল রইলেন এবি ডেভিলিয়ার্স। |