খেলার দুনিয়ায় তাঁদের সম্পর্কটা ছিল রূপকথার। যে রোমান্স নিয়ে সত্তরের দশকে স্বপ্নে বিভোর ছিল গোটা যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বিয়ে পাকা হয়ে গিয়েও সেই রূপকথা আচমকা ভেঙে চুরমার হয়ে যায় ১৯৭৪ সালে। এত দিন সেই সম্পর্কের ভাঙন নিয়ে অনেক জল্পনা হাওয়ায় ভেসেছে। কিন্তু এ বার, ষাট বছর বয়সে এসে মুখ খুললেন রূপকথার নায়ক নিজেই। ইঙ্গিত দিলেন, বাইশ বছর বয়সে সেই সময় উনিশের টিনএজার ক্রিস এভার্টের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছ্বেদের কারণ সম্ভবত ছিল তাঁদের সন্তান, যাকে ভ্রূণেই বিনষ্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ক্রিস।
নিজের জীবনের বিভিন্ন অধ্যায় নিয়ে একটি বই লিখেছেন জিমি কোনর্স। নাম ‘দ্য আউটসাইডার’। সেখানে ক্রিসের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক নিয়ে কোনর্স লিখেছেন: “তারুণ্যের আবেগ থেকে আমাদের একটা ‘ইস্যু’ তৈরি হয়েছিল যা নিয়ে কাপল হিসাবে আমাদের দু’জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। ক্রিসি আমাকে ফোন করে বলল, ও লস অ্যাঞ্জেলিস আসছে ‘ইস্যু’টার ব্যবস্থা করতে। আমি অবশ্য প্রকৃতিকে তার নিজের মতো বইতে দিতে চেয়েছিলাম। এবং তৈরি ছিলাম যা ঘটতে চলেছে তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিতে। কিন্তু ক্রিসি চায়নি। ও একা সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেছিল। ওর মনে হয়েছিল ওর কেরিয়ার এবং ভবিষ্যতের জন্য ব্যাপারটা বড় ঝুঁকি হয়ে যাবে। |
ও আমাকে বলে, তুমি খুঁটিনাটি দিকগুলো সামলে দাও। জবাবে আমি লিখি, আমাকে খবরটা জানানোর জন্য ধন্যবাদ। তবে এই বিষয়ে আমার যেখানে কথা বলার কোনও অধিকারই নেই, তখন তোমাকে সাহায্য করার বাইরে আমার আর কোনও ভূমিকা আছে বলে তো মনে হয় না।”
কোনর্সের অভিমানটা এই থেকেই জমাট বাঁধতে শুরু করে। তিনি লিখেছেন, “বীভৎস একটা অনুভূতি হয়েছিল। কিন্তু আমি বুঝে গিয়েছিলাম আমাদের সম্পর্কটা আর টিঁকবে না। বিয়ে করলে সেটা আমাদের দু’জনের কারও জন্যই শেষ পর্যন্ত সুখের হবে না।” এর পর কোনর্স লিখেছেন, ক্রিসকে তিনি বলেন যে তাঁদের দু’জনেরই বয়সটা যেহেতু কম, তাই বিয়ের মতো এতবড় একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও একটু ভাবা উচিত। কোনর্সের কথায় ক্রিসের জবাব ছিল, “ওকে। তুমি যদি সেটাই ভাব তা হলে ঠিক আছে। কাল আমার একটা ম্যাচ আছে। নো প্রবলেম।” কোনর্স জানিয়েছেন ওই প্রতিক্রিয়াটাই কফিনে শেষ পেরেকের কাজ করে। লিখেছেন, “ক্রিসকে আমি অসম্ভব ভালবাসতাম। কিন্তু বুঝেছিলাম আমাদের দু’জনের উচ্চাকাঙ্খা আমাদের ভবিষ্যৎকে ক্ষতবিক্ষত করতে পারে। বারবার একটা প্রশ্নই ফিরে আসছিল। একই পরিবারে কি দু’জন এক নম্বর সহাবস্থান করতে পারে?”
বইয়ে ক্রিস প্রসঙ্গ ছাড়াও নিজের ডিসলেক্সিয়া কাটিয়ে ওঠার লড়াই, পরবর্তী সময়ে স্ত্রী প্যাটি ম্যাকগুয়ারের সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্কের নানা টানাপোড়েন, জায়ার নেশা আর কোর্টের নানা যুদ্ধ নিয়েও খোলামেলা অনেক কথা লিখেছেন কোনর্স। |