ডানলপের সম্পত্তি বিক্রিতে বাধা কাটল অবশেষে। সাহাগঞ্জ এবং তামিলনাড়ুর দু’টি টায়ার কারখানার সম্পত্তি বিক্রি করে সেই টাকাতেই শ্রমিকদের পাওনা-সহ নানা বকেয়া মেটাতে হবে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় ও মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ ওই রায় দেয়, যা আপাতত কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে সাহাগঞ্জ ইউনিটের শ্রমিকদের। তবে ডানলপের ভাইস প্রেসিডেন্ট (কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স) ধ্রুবজ্যোতি নন্দী বলেন, “এই মামলার উপরে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে।”
ডানলপের শ্রমিকেরা এবং মাদুরা কোটস্-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা ডানলপ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করে। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে শ্রমিকদের বেতন-সহ অন্যান্য সংস্থার বকেয়া কোটি কোটি টাকা মালিকপক্ষ দিচ্ছেন না। হাইকোর্ট লিক্যুইডেটর বসিয়ে হুগলির সাহাগঞ্জ ও তামিলনাড়ুর টায়ার কারখানার সম্পত্তির তালিকা তৈরি করতে বলে। কারখানা কর্তৃপক্ষ ডিভিশন বেঞ্চে ওই নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ চান। ডিভিশন বেঞ্চ ১০ কোটি টাকা আদালতে জমা রাখার নির্দেশ দেয়। দীর্ঘ টালবাহানার পরে ডানলপ কর্তৃপক্ষ তা আদালতে জমাও দিয়েছিলেন। যদিও কর্তৃপক্ষের স্থগিতাদেশের আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত।
শেষে এই মামলায় স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান ডানলপ কর্তৃপক্ষ। কোর্ট স্থগিতাদেশের আবেদন মঞ্জুর করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেই ফের শুনানির নির্দেশ দেয়। দীর্ঘ শুনানির পরে বেঞ্চ ডানলপের দায়ের করা তিনটি মামলাই এ দিন খারিজ করেছে। ফলে ডানলপের দু’টি কারখানার সম্পত্তি নির্ধারণ করে, তা বিক্রিতে আর কোনও বাধা রইল না।
হাইকোর্টের রায়ে সন্তুষ্ট ডানলপের শ্রমিকেরা। কারখানার হোস বিভাগের শ্রমিক রামেশ্বর সিংহ বলেন, “একমাত্র আদালতের হস্তক্ষেপেই বকেয়া টাকা পেতে পারি।” আর এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মী গুরুদাস নিয়োগীর অভিযোগ, বছর দু’য়েক আগে অবসর নিলেও কর্তৃপক্ষের কাছে বকেয়া ৪ লক্ষ টাকা বার বার চেয়েও পাননি। উদাহরণ আরও আছে।
অভুয়ডানলপের আইএনটিটিইউসি সভাপতি বিদ্যুৎ রাউতের অভিযোগ, “মালিকপক্ষ দিনের পর দিন ভাঁওতা দিয়েছেন। বহু আবেদন-নিবেদনের পরে রবীন দাস নামে এক শ্রমিককে ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৬১৪ টাকার চেক দেওয়া হলেও তা বাউন্স করেছে। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আমরা এফআইআর করেছি থানায়।” বিদ্যুৎবাবুর অভিযোগ প্রসঙ্গে অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি ধ্রুবজ্যোতিবাবু।
|