পানীয় জলের সঙ্কটে জেরবার রঘুনাথগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ব্লকের ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারাই পানীয় জলের ব্যাপারে নির্ভর করেন নলকূপের উপর। অথচ ব্লকের হাজার দেড়েক নলকূপের ৪০ শতাংশই বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে।
জেলার ২৬টি ব্লকের মধ্যে ১৯টিকে আর্সেনিক প্রবণ বলে চিহ্নিত করা হয়। রঘুনাথগঞ্জ আর্সেনিক কবলিত ব্লকের মধ্যে পড়ে। ঘরে ঘরে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দিতে ২০০৫ সালে কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে ভাগীরথীর জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বছর তিনেকের মধ্যে ওই কাজ শেষ হবে বলে জানায় জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। কিন্তু বছর আটেক পরেও শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ। ফলে তীব্র জলকষ্টে রয়েছেন বাসিন্দারা। |
রঘুনাথগঞ্জ-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের আসরাফ শেখ বলেন, “গোটা ব্লক জুড়েই রয়েছে পানীয় জলের আকাল। বছর দেড়েক আগে রঘুনাথগঞ্জ শহরে ভাগীরথীর জল সরাবরাহ শুরু হয়েছে। ছ’টি পঞ্চায়েতে জলাধার তৈরির কাজ শেষ হলেও এখন সেগুলিতেও ফাটল ধরেছে। মির্জাপুর পঞ্চায়েতে অবশ্য নিজস্ব পাইপ লাইন রয়েছে। তাই সেখানে সমস্যা নেই।” স্থানীয় জামুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শঙ্কর দাস বলেন, “জলস্তর নীচে নেমে গিয়েছে। নলকূপ সারিয়েও জল উঠছে না। গভীর নলকূপ বসাতে খরচ প্রায় লক্ষাধিক টাকা। পঞ্চায়েতের ওই পরিমাণ টাকা কোথায়?’’
রঘুনাথগঞ্জ শহরের বালিঘাটা পল্লিতেও পানীয় জলের আকাল। পুর কাউন্সিলর বিকাশ নন্দ বলেন, “ভাগীরথীর পাইপ লাইনের জল এখানে আসছে না। বালিয়া পল্লিতে পৃথক জলাধার বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।”
|
ভাগীরথী জল প্রকল্প |
• ৮৪টি গ্রাম ও রঘুনাথগঞ্জের ১ লক্ষ ৮২ হাজার জনের জন্য পানীয় জল মিলবে প্রকল্পে।
• ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৫ সালে শুরু হয় ভাগীরথী জল প্রকল্পের কাজ।
• ৮ বছরেও কাজ শেষ হয়নি। তৈরি হওয়া ৬টি জলাধারে ইতিমধ্যে ফাটলও ধরেছে।
• মাসের মধ্যে প্রকল্প চালুর আশ্বাস দিয়েছে জন স্বাস্থ্য ও কারিগরী দফতর। |
|
প্রকল্পের নির্মীয়মান এলাকার ইঞ্জিনিয়ার এ কে সেন বলেন, “পাইপ লাইন বসাতে গিয়ে নানা সমস্যা হওয়ায় কাজ দেরি হয়েছে। দফরপুর, গনকর ও দেউলি-র মতো কিছু গ্রামেও পৌঁছেছে ভাগীরথীর জল। মাস খানেকের মধ্যে তা সমস্ত গ্রামে পৌঁছবে।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ১ লক্ষ ৩২ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। কিন্তু প্রকল্পটি রক্ষনাবেক্ষণের জন্য বছরে আড়াই কোটি টাকা দরকার। তার সংস্থান এখনও হয়নি।” |