ছেলেধরা সন্দেহে মারে মৃত্যু ১ জনের, জখম ৩ |
ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। গুরুতর আহত তিন জন। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে মগরার তেলিয়াপাড়ার কলবাজারে। আহতদের উদ্ধারে গেলে আক্রান্ত হয় পুলিশ। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চলে। ইটের ঘায়ে জখম হন গাড়ির চালক-সহ সাতজন পুলিশ কর্মী। ন’জনকে পরে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলবাজার এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলের সামনে এ দিন চার জন অপরিচিত ব্যক্তিকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। অভিযোগ, বেলা ১১টা নাগাদ স্কুল-ফেরত দুই শিশুর হাত ধরে হেঁটে যেতে দেখা যায় তাদের। ধরে ফেলা হয় চার জনকে। |
ভাঙা গাড়ির কাচ। ছবি: তাপস ঘোষ।
|
সন্দেহভাজনদের নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা হয়। কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, তাদের ভাষা বুঝতে পারেনি এলাকার কেউ। তাতে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহ আরও বাড়ে। কাছেই একটি ফাঁকা মাঠে নিয়ে গিয়ে শুরু হয় গণধোলাই। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। চার যুবককে উদ্ধার করতে গেলে জনতার রাগ গিয়ে পড়ে পুলিশের উপরে। ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। পরে আরও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। জখমদের নিয়ে যাওয়া হয় মগরা হাসপাতালে। সেখান থেকে পাঠানো হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে। দুপুরে সেখানেই মারা যান দীনেশ রাঠৌড় (৪০) নামে এক ব্যক্তি। সুরেশ রাঠৌড়, লাড্ডু রাঠৌড় ও ছোটে রাঠৌড়ের চিকিৎসা চলছে।
ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) দেবশ্রী স্যান্যাল বলেন, “ঠিক কী কারণে গণধোলাই, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।” পুলিশ জানতে পেরেছে, মারধর করে চার জনকেই পুড়িয়ে মারার মতলবে ছিল জনতা। কোথা থেকে কী উদ্দেশ্যে ওই চার জন মগরা এসেছিলেন, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
হুগলি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গত কয়েক মাসে ছেলেধরা সন্দেহে একাধিক গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। বহু মানুষের দাবি, শিশু চুরির চেষ্টাকে আমল দিতে চাইছে না পুলিশ। পুলিশের উপরে ভরসা কমছে মানুষের। সে জন্য আইন নিজেদের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। যদিও পুলিশ কর্তাদের একাংশের অনুমান, স্রেফ গুজবের জেরেই ঘটছে এমন সব কাণ্ড-কারখানা। শিশু চুরির অভিযোগ থাকলে থানায় যোগাযোগের পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। |