রক্তের চরম সঙ্কট চলছে। অবস্থা এমন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তরাও রক্ত পাচ্ছে না। এ দিকে শিবিরের সংখ্যাও কমছে। পরিস্থিতি দেখে এগিয়ে এলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরাই। কলেজের ছাত্র সংসদের উদ্যোগে মঙ্গলবার এক রক্তদান শিবির হল। সংসদের সাধারন সম্পাদক সোহম পালুই বলেন, “রক্তের সঙ্কট চলায় বহু মানুষ সমস্যায় পড়ছেন। হাসপাতালে এসেও রক্ত না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি দেখে আমরা রক্তদান শিবির করার উদ্যোগ নিই।” মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এ ভাবে এগিয়ে আসায় খুশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। হাসপাতাল সুপার যুগল করের কথায়, “প্রতি বছরই এই সময় রক্তের সঙ্কট চলে। গরম পড়ায় শিবির কম হয়। তাতেই সমস্যা দেখা দেয়।” সুপার বলছিলেন, “ছাত্রছাত্রীরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে শিবিরের আয়োজন করেছে। সকলে যদি এ ভাবে এগিয়ে এসে রক্ত দেয়, তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।” |
গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেদিনীপুর মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্ক মাঝেমধ্যে রক্ত শূন্যও হয়ে পড়ছে। মঙ্গলবার দুপুরে ব্লাড ব্যাঙ্কে সবমিলিয়ে ৫ বোতল রক্ত ছিল। এই অবস্থায় অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম, ঘাটাল থেকে খড়্গপুর জেলার প্রায় সব হাসপাতালে রক্তের সঙ্কট চলে। মহকুমা হাসপাতালগুলোর চাপ এসে পড়ে মেডিক্যালের উপর। আবার শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, পাশের জেলা থেকেও রোগীরা এসে ভর্তি হন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখন শিবিরের সংখ্যা তো কমছেই, রক্তদাতার সংখ্যাও কমছে। ফলে, রক্ত সংগ্রহ কম হচ্ছে। সাধারণত, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুন, এই তিন মাস জেলা জুড়ে রক্তের সঙ্কট চলে। এ বারও সেই অবস্থা হয়েছে।
মঙ্গলবার মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্কের পাশের দু’টি ঘরে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। রক্ত দেন মোট ৬৬ জন। তার মধ্যে ৪৯ জন ছাত্র, ১৭ জন ছাত্রী। সফিকুল সরকার, প্রিয়নাথ মজুমদার, তোর্সা সরকার, ঋত্বিকা বিশ্বাসদের মতে, সকলের উচিত রক্তদান করা। একজনের রক্ত অন্যজনের জীবন বাঁচাতে পারে। শিবিরের সংখ্যা বাড়ানো ছাড়াও গড়ে অন্তত ৫০ জন রক্ত দিলে সঙ্কট দূর হবে। এক বোতল রক্তের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে না। |