শিশুর মানসিকতার বিকাশ এবং উন্নতিতে এক দিকে যেমন বাবা-মার দায়িত্ব থাকে, অন্য দিকে তেমনই দায়িত্ব থেকে যায় শিক্ষক-শিক্ষিকার। এই কারণেই শিক্ষাগ্রহণের সূত্রপাতে খেলাচ্ছলে শিশুমনের কৌতূহল স্পৃহা জাগিয়ে তুলতে হয়। ২০১৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে এক অভিনব পদ্ধতি চালু হল কোচবিহার সারদা শিশুতীর্থ সারদানগরে। চতুর্থ পর্যন্ত শ্রেণিসীমায় এ বিভাগের নামকরণ হল ‘বাটিকা’। শিশুবিকাশের লক্ষ্যে উন্নত পরিকল্পনা নিয়ে এ বছরে তিন থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত ৩৯ শিশু নিয়ে ‘বাটিকা’র দ্বার উন্মুক্ত করলেন সারদা শিশুতীর্থ বিদ্যালয়ের কর্ণধার চঞ্চলরঞ্জন দাস। সকাল ঠিক ৮টায় বাটিকায় প্রবেশ। সেখানে নানা খেলনা সামগ্রী, যেমন পুজোর উপকরণ থেকে শুরু করে টেডিবিয়ারনিয়ে ব্যস্ত খুদেরা। |
এ ছাড়া রয়েছে শিশুর প্রিয় বহু বিষয়ের সংগ্রহ। আছে নানা জীবজন্তুর খেলনা, যা দিয়ে শিশুরাই তৈরি করতে পারে চিড়িয়াখানা। ‘জাম্পিং প্লে’ শিশুদের নজর কাড়ছে অন্য ভাবে। ২০ ফুট বাই ২০ ফুট মশারির ভেতরে শিশুরা রং-বেরঙা অনেক বল নিয়ে লাফাচ্ছে মনের আনন্দে। এ হল শিশুর শরীরের গঠন বৃদ্ধি অনুশীলনের অনন্য উপায়। দেড় থেকে দু’ ঘণ্টা সময় বাটিকায় দাদামণি-দিদিমণির স্নেহের পরশে ও আন্তরিক প্রয়াসে শিশুরা কখন যেন বাবা-মায়ের সঙ্গহীনতা ভুলে একাত্ম হয়ে যায় বাটিকার সবুজ অঙ্গনে। শিশুদের যাতায়াতে তিনটি বাস এবং ভ্যানরিকশার ব্যবস্থা করা হয়েছে। লক্ষ করা যাচ্ছে, দুগ্ধপোষ্য এই সব শিশুর বাটিকার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে বই কমছে না। সুবৃহৎ এই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক দিকে যেমন ফুল-ফল এবং অন্য গাছগাছালির সমারোহে পরিপূর্ণ, তেমনই অন্য দিকে পাখির মতো শিশুদের কলকাকলিতে মুখরিত এই পরিবেশ আশ্রমের সমতুল্য। এক আনন্দঘন পরিবেশ কোচবিহার সারদা শিশুতীর্থের ‘বাটিকা’ কুঞ্জ।
|
বাড়িতে ছিল সাঙ্গীতিক পরিবেশ। ঠাকুর্দা লাহাংকারী গান গাইতেন। বাবা ছিলেন গানের ‘উস্তাদ’। পরম্পরাগত ভাবে সেই ঐতিহ্যের সার্থক উত্তরসূরি তিনি। তরাই অঞ্চলে এ লোকসঙ্গীতের গুরু হিসাবে পরিচিত তারণ সিংহ। রাজ্য সরকারের গুরুকুল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হন পেশায় কৃষিজীবী এই ব্যক্তি। ১৯৯০ সালে তিনি গড়ে তোলেন লাহাংকারী পরিষদ। সেই থেকে বিনা পারিশ্রমিকে তৈরি করে চলেছেন ছাত্রদের। গান লিখেছেন ৫০টির মতো। |
রাধাকৃষ্ণের লীলা ছাড়াও তাঁর গানের বিষয়ে উঠে আসে নেশার বিরুদ্ধে প্রচার। তারণ সিংহের সংগ্রহে আছে ২০০-র মতো গান। নিজ উদ্যোগে সারিন্দা দোতারার মতো লোকবাদ্য প্রশিক্ষণ দেন তিনি। তরাই অঞ্চলে লুপ্তপ্রায় এই লোকসঙ্গীত, লোকবাদ্য বাঁচিয়ে রাখতে দু’দশক নিজেকে নিবিষ্ট করেছেন খড়িবাড়ির ডুহাগুড়ি গ্রামের এই শিল্পী। যে লাহাংকারী গান তরাই অঞ্চলের প্রাণ, ঠাকুরানি গান তরাই অঞ্চলে মানতা প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবি রাখে।
|
বিশ্বভারতীর দর্শনের অধ্যাপক ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক গবেষক সুবীর রায় মাত্র ছত্রিশ বছর বয়সেই চলে গেলেন। সম্প্রতি তাঁর স্মরণসভা হয়ে গেল কামাখ্যাগুড়ির চেপানিতে, তাঁর নিজের বাসভবনে। স্মরণসভাতে সহকর্মী ছাড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন ডেপুটি রেজিস্ট্রার নীতিন বিশ্বাস -সহ এলাকার বিশিষ্টজনেরা ছিলেন। |