মিলবে অর্থ বিল পাশের সুযোগ
সংসদ অচলই, বিজেপির চালে বিপাকে কংগ্রেস
রজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে লোকসভা ভোট। তার আগে দুর্নীতির প্রশ্নে কংগ্রেসকে কোণঠাসা করার পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতার পথে নামল বিজেপি। এক দিকে কয়লা কেলেঙ্কারির সিবিআই তদন্তে হস্তক্ষেপের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে সংসদ অচল রাখছে তারা। সেই সঙ্গে সুষমা স্বরাজ-অরুণ জেটলিরা কৌশলে এ-ও সুনিশ্চিত করতে চাইছেন যাতে, সংসদে এ বারও জমি বিল, খাদ্য নিরাপত্তা বিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ না করাতে পারে সরকার। লোকসভা ভোটের আগে এই বিলগুলি পাশ করিয়ে রাজনৈতিক কৃতিত্ব নিতে চাইছিলেন সনিয়া-রাহুল। সুষমাদের মতে, বহু প্রচারের পরেও এই বিলগুলি পাশ না হলে ব্যর্থতার দায় চাপবে কংগ্রেসেরই ঘাড়ে।
বিরোধীদের এই কৌশলের মুখে কিছুটা বেকায়দাতেই পড়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সরকারের কাছে আপাতত এটুকুই ইতিবাচক যে, শেষ পর্যন্ত আগামী কাল সংসদে অর্থবিল পাশ করানোর সুযোগ দিতে রাজি হয়েছেন বিজেপি তথা বিরোধী নেতারা। বিজেপির অবশ্য বক্তব্য, তাঁরা কোনও সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি করতে চান না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসলে অর্থবিল সংসদে পাশ করাতে না পারলে সরকারের পতন অনিবার্য। অথচ বিজেপি এখনই ভোটের জন্য প্রস্তুত নয়। তাই শুধু অর্থবিল পাশ করাতে দেবে বিজেপি। সূত্রের খবর, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কমলনাথের সঙ্গে বৈঠকে লোকসভার বিরোধী নেত্রী সুষমা স্বরাজ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বেলা ১২টার পর তাঁরা দু’ ঘণ্টার জন্য লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করবেন। কেন তাঁরা ওয়াকআউট করছেন, তা ব্যাখ্যা করার সুযোগ তাঁদের দিতে হবে। তাঁরা ওয়াকআউট করার পর সরকার রেলের অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল ও অর্থবিল পাশ করিয়ে নিতে পারে।
রাজনৈতিক সূত্রে এ-ও বলা হচ্ছে, সরকারকে অর্থবিল পাশ করানোর পর যে হেতু আর কোনও সহযোগিতা করবে না বিজেপি, তাই সময়ের আগেই বাজেট অধিবেশন মুলতবি করে দেওয়া হতে পারে।
বিজেপি এ ভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করায় অসহায় সরকার। তবে রাজনৈতিক ভাবে পাল্টা চাপ তৈরি করতে তারাও আজ থেকে আক্রমণে নেমে পড়েছে। মণীশ তিওয়ারি, সন্দীপ দীক্ষিতের মতো কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, “আম-আদমির কল্যাণ চাইছে না বিজেপি। সংসদ চালিয়ে দেশের গরিব মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা বিল পাশ করাতে চেয়েছিল সরকার। কৃষক এবং শিল্প মহলের সমস্যা দূর করতে জমি অধিগ্রহণ বিল পাশ করাতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে বাধা দিয়ে স্রেফ রাজনীতির জন্য সাধারণ মানুষের ক্ষতি করছে বিজেপি।”
পরে কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “কর্নাটকে বিধানসভা ভোট আসন্ন। সেখানে বিজেপির হার এক রকম নিশ্চিত। এই অবস্থায় কেন্দ্রে অস্থিরতা তৈরি করে কর্নাটকে নিজেদের শক্তির বার্তা দিতে চাইছে বিজেপি।” এই বিষয়টি মাথায় রেখেই সংসদে বিজেপির অবস্থান নিয়ে আক্রমণের সুর চড়াতে চাইছে দল। শুধু তাই নয়, কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে সিবিআই তদন্তে হস্তক্ষেপের অভিযোগে বিজেপি যখন তীব্র আক্রমণাত্মক, তখন পাল্টা আগ্রাসন দেখাচ্ছেন মনমোহন। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর ইস্তফার যে প্রশ্ন নেই, তা দু’দিন আগেই জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী এ-ও দেখাতে চাইছেন যে, বিজেপি তিলকে তাল করে ভ্রান্ত প্রচার করছে।
কংগ্রেসের একটা উদ্বেগ অবশ্য রয়ে গিয়েছে। তা হল, কাল সুপ্রিম কোর্টে ফের কয়লা খনি বণ্টন নিয়ে সিবিআই তদন্তের ভিত্তিতে শুনানি হবে। আদালত যদি ‘তদন্তে হস্তক্ষেপে’ অসন্তোষ প্রকাশ করে সরকারের বিরুদ্ধে কোনও পর্যবেক্ষণ জানায়, তা হলে বিপাক বাড়বে কংগ্রেসের। রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের মতে, সে রকম কোনও পরিস্থিতি যাতে না হয়, সে জন্য সরকার নিশ্চয়ই ময়দানে নেমেছে। তা ছাড়া ওই মামলা নিয়ে আজও অ্যাটর্নি জেনারেল জি ই বাহানবতীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ-ও হতে পারে যে, আদালত কোনও নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ জানাবে না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণাত্মক হয়েছেন তিনি।
এই সাত-সতেরোর মধ্যে একটা বিষয় অত্যন্ত স্পষ্ট লোকসভা ভোটের আগে সরকারের সঙ্গে পুরোপুরি অসহযোগিতা করে চলবে বিজেপি। এবং তার জেরে আপাতত ঠান্ডা ঘরে চলে যেতে পারে জমি বিল, খাদ্য নিরাপত্তা বিল, স্থল সীমান্ত চুক্তির মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.