এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই)পক্ষ থেকে কর্মীরা বসাতে গিয়েছিলেন পাম্প। কিন্তু অভিযোগ, পাম্প বসানোর কাজে দলীয় কর্মীকে কাজে নেওয়ার দাবি না মানায় তৃণমূলের নেতা কর্মীদের বাধায় কাজ না করে ফিরে আসতে হল তাঁদের। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার সোনাগাঁ এলাকায়।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গোসাবা ব্লকের গোসাবা বাজার, আরামপুর, দুলকি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মানুষ পানীয় জলের সমস্যায় ভুগছেন। অবস্থা এমনই যে, বাসিন্দাদের ২-৩ কিলোমিটার দূর থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করে আনতে হয়। সোনাগাঁ এলাকায় পিএইচই-র একটি পাম্প হাউস ছিল। তা থেকে জল সরবরাহ করা হত। কয়েক বছর আগে সেটি খারাপ হয়ে যায়। গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরএসপি-র নারায়ণ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। প্রশাসনের কাছে এ নিয়ে বার বার দরবার করা হয়েছে। সম্প্রতি বিডিও অফিসে বিডিও, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিক এবং জনপ্রতিধিদের নিয়ে এক বৈঠকে টিক হয়, সোনাগাঁ এলাকায় পিএইচই-র যে পাম্পটি দীর্ঘদিন ধরে কারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে সেটি ফের নতুন করে বসানো হবে।” তাঁর অভিযোগ, “সেই মতোগত বৃহস্পতিবার পিএইচই-র ইঞ্জিনিয়াররা পাম্প বসাতে এলে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তাঁদের দলের একজনকে পাম্প অপারেটরের কাজে নিয়োগ এবং অন্যত্র পাম্প বসানোর দাবি জানায়। কিন্তু পিএইচই তাতে রাজি না হওয়ায় তৃণমূলের লোকজন কাজে বাধা দেয়। এর পরেই পাম্প না বসিয়ে যন্ত্রপাতি নিয়ে চলে যান পিএইচই-র লোকজন।”
অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েত সমিতির সেই বিরোধী দলনেতা কমলেশ মণ্ডলের পাল্টা দাবি, “স্থানীয় কিছু লোকজনই পাম্প বসানোর কাজে বাধা দিয়েছে। আমরাও চাই ওই এলাকায় পাম্প বসানো হোক। এ ব্যাপারে দলের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।” আর যাঁর বিরুদ্ধে পিএইচই-কে বাধা দেওয়ার অভিযোগ সেই তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ শীটের দাবি, “ওই ঘটনায় কোনওভাবেই তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়। তা ছাড়া পাম্প বসালে এলাকায় জলস্তর নেমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকার লোকজন। পাশাপাশি পাম্প বসিয়ে সেখানে বিশেষ একরটি পরিবারের লোককে চাকরি দেওয়ার প্রতিবাদে স্থানীয় মানুষ কাজে বাধা দিয়েছেন।” তবে বিশেষ একটি পরিবারের বিষয়য়ি স্পষ্ট জানাতে পারেননি তিনি।
ক্যানিং মহকুমা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অরুণ হালদার বলেন, “ওই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। সেই কারণে খারাপ হয়ে যাওয়া পাম্পটির পরিবর্তে আমরা নতুন একটি পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু স্থানীয় সমস্যার কারণে তা বসানো গেল না।”
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, “যেখানে পাম্পটি বসাতে গিয়েছিলেন পিএইচই-র লোকজন সেই এলাকায় জলের তেমন সমস্যা নেই। সমস্যা রয়েছে গোসাবা বাজার এলাকা এবং পাশ্ববর্তী এলাকায়। সেই কারণে স্থানীয় তৃণমূলের লোকজন এবং এলাকার মানুষ পাম্পটি ওই এলাকায় বসানোর দাবি জানান। তা ছাড়া এ ব্যাপারে পিএইচই আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি।” তৃণমূলের লোককে পাম্প অপারেটর হিসাবে নিয়োগের দাবির বিষয়টি জয়ন্তবাবু অস্বীকার করেন। |