পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যে ত্রস্ত চাপড়া সীমান্ত
চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্যে ত্রস্ত সীমান্তের মানুষ। সন্ধ্যা নামলেই বাংলাদেশী পাচারকারীরা আশ্রয় নিতে আসে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে। আশ্রয় দিতে নারাজ হলেই রীতিমতো রোষে পড়তে হয় দুষ্কৃতীদের। শুক্রবার সাঁঝবেলায় পড়শি দেশের জনা কয়েক পাচারকারী চাপড়ার কাঁটাতারের বেড়া ঘেষা হাটখোলা গ্রামের শাখওয়াত হোসেন বিশ্বাসের বাড়িতে রাত কাটাতে চেয়ে আব্দার করে। কিন্তু দুষ্কৃতীদের অন্যায় দাবি মানেনি সীমান্তের বিশ্বাস পরিবার। ফল মেলে হাতেনাতে। ওই রাতে তাঁদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিল ‘বেয়াদপ’ বিশ্বাস বাড়ির লোকজনকে পুড়িয়ে মারা। অবশ্য প্রতিবেশীদের তৎপরতায় দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। কোনও প্রাণহানি ঘটেনি।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা হাটখোলায় সাতশো পরিবারের বাস। ভারতের দিকে কাঁটাতারের ঘেরাটোপ থাকলেও বাংলাদেশের দিকে সে সবের কোনও বালাই নেই। ফাঁকা-ধূ ধূ মাঠ। একটু রাত নামলেই ভিনদেশী দুষ্কৃতীরা গ্রামে ঢোকে। গ্রামবাসীদের কাছে রাত কাটানোর আর্জি জানায়। কোনও বাড়িতে আশ্রয় মিললে বিএসএফ বা বিজিবি-র তল্লাশি থেকে রেহাই মেলে। রক্তচক্ষুর কাছে হার মেনে অনেকে তাদের বাড়িতে ঠাঁইও দেন। কিন্তু এ দিন সন্ধ্যায় মিজানুর বিশ্বাসের হানা দিয়ে রাত কাটাতে চায় জনা কয়েক পাচারকারী। মিজানুর পত্রপাট তাদের দাবি খারিজ করে দেন। দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে তখনকার মত বিদায় নেয় দুষ্কৃতীরা। মাঝ রাতে মিজানুর বিশ্বাস ও শাখওয়াত বিশ্বাসের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় না। আগুন ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবেশী ফজলুল সর্দারের বাড়িতেও। আশপাশের লোকজন তড়িঘরি শ্যালো চালিয়ে পুকুর থেকে জল তুলে আগুন নেভান। এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। শাখওয়াত হোসেন বলেন, “গত বছর বাঙালঝি কলেজ থেকে বিএ পাশ করেছি। রেজাল্ট, সার্টিফিকেট সব আগুনে পুড়েছে। কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচেছি।” এলাকার বাসিন্দা চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কংগ্রেসের সাহেব আলি সর্দার বলেন, “শুধু চোরাচালানকারীরাই নয়, অনেক অপরাধীও পিঠ বাঁচাতে সীমান্তের বিভিন্ন গ্রামে গা ঢাকা দেয়। প্রতিবাদ করলেই তাদের হামলার শিকার হতে হয়।” গ্রামবাসীরা জানাচ্ছে, আমাদের জমির ফসল কেটে নিয়ে যায় বাংলাদেশী দুর্বৃত্তেরা। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আমাদের কিছুই করার থাকে না। চাপড়ার বিডিও রিনা ঘোষ বলেন, “দুষ্কৃতীরা তিনটি বাড়ি পুড়িয়েছে বলে খবর পেয়েছি। ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে।” অতিরিক্ত জেলা শাসক অরবিন্দ ঘোষ বলেন, “জেলার সীমান্ত লাগোয়া সব জায়গাতেই বাংলাদেশী দুষ্কৃতীরা মাঝেমধ্যে হানা দেয়। এ ব্যাপারে দ্রুত বিএসএফের সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.