এক কিশোরীকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তার বাবাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার সকালে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির চকচৈতন্য গ্রামে একটি রেশম খেতে রিঙ্কু ঘোষ (৮) নামে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ওই কিশোরীর বিবস্ত্র দেহ পাওয়া যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তার সারা দেহে অত্যাচারের চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল। ওই কিশোরীর মা শিখা ঘোষের দাবি, তাঁর স্বামী বাবলু ঘোষই তাঁদের মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী। পুলিশ সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই বাবলু ও তাঁর এক বন্ধু নিরঞ্জন মণ্ডলকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ এবং ৩৪ ধারায় গ্রেফতার করেছে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “কিছু টাকার বিনিময়ে বাবলুই তাঁর কন্যাকে কয়েকজন বন্ধুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। ওই কিশোরীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে, ওই কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছিল। পুলিশ সুপার অবশ্য বলেন, “ময়নাতদন্তের পরেই জানা যাবে তার উপরে এমন কোনও অত্যাচার হয়েছিল কি না।”
শিখাদেবী জানান, তাঁদের দুই মেয়ে। বাবলুর দুধের ব্যবসা। তিনি বলেন, “দুই মেয়েকেই মারধর বকাবকি করত ওদের বাবা। তারা তাই বাবাকে খুব ভয় করত। শনিবার রাতে আমার স্বামীই বড় মেয়ে রিঙ্কুকে ডেকে নিয়ে যায় বাড়ির বাইরে। তারপরে স্বামী ফিরে এলেও রিঙ্কু ফেরেনি। আমার সন্দেহ আমার স্বামীই রিঙ্কুর মৃত্যুর জন্য দায়ী।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রিঙ্কুকে পাড়ার সকলেই ভালবাসতেন। স্কুলে বা পাড়ায় ছুটোছুটি করে দাপিয়ে বেড়াত সে। তার নিথর দেহ দেখে চমকে ওঠেন গ্রামের মানুষ। কেবল নির্বিকার ছিলেন ওই কিশোরীর বাবা বাবলু। প্রতিবেশী পিন্টু ঘোষ বলেন, “বাবলু দিনরাত মদ খেয়ে থাকতেন। মদ্যপ বন্ধুও ছিল বেশ কয়েকজন। ব্যবসার লাভের টাকা মদেই ঢালতেন। শনিবার রাত থেকেই রিঙ্কু নিখোঁজ ছিল। তাতে আমরা সকলে উদ্বিগ্ন হলেও বাবলুর কোনও বিকার ছিল না।”
সকালে মেয়ের দেহ পাওয়ার পরেও তাঁর নির্বিকার হাবভাব দেখে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তখন পুলিশকে খবর দেন তাঁরা। ওই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অলীক হালদারের কথায়, রিঙ্কু খুবই চঞ্চল ছিল। ওকে সবাই ভালবাসতেন। তাকে এ ভাবে অত্যাচার করে যারা হত্যা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন তিনি। |