|
|
|
|
মেদিনীপুর থেকে পাততাড়ি গোটাল এক ভুঁইফোঁড় সংস্থা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সংস্থার নাম ‘ড্রিমলাইফ অ্যাগ্রো প্রোজেক্টস্ লিমিটেড’। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে সংস্থার ক্যাচলাইন দেওয়া হয়েছিল, ‘ওনলি ফেথ, নাথিং এলস্’। তবে শেষ রক্ষা হল না। সারদা কেলেঙ্কারির মধ্যেই মেদিনীপুর শহর থেকে পাততাড়ি গোটাল এই ভুঁইফোঁড় আর্থিক সংস্থাটি। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সামসুল হক বলেন, “কয়েক মাস আগেই সংস্থার অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সংস্থার কাছে যাঁর যা প্রাপ্য ছিল, তাঁদের দেওয়া হয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, সংস্থার সঙ্গে কারা ছিল, কত সংখ্যক আমানতকারী ছিলেন, তদন্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “ওই সংস্থার সম্পর্কে কেউ কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। তবে, সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
মেদিনীপুর শহরের সুভাষনগরে একটি বাড়ির দোতলায় ভাড়া নিয়ে চলছিল সংস্থার অফিস। রবিবার দুপুরে অফিস থেকে চেয়ার-টেবিল-আলমারি বের করার সময় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। বাড়ির মালিক সুশান্ত শিকদার থাকেন শহরের মিত্র কম্পাউন্ডে। জানা গিয়েছে, প্রায় ৬ মাস ধরে সংস্থাটি বাড়ি ভাড়া দেয়নি। বাড়ির মালিক যখনই তাগাদা দিয়েছেন, তখনই তাঁকে জানানো হয়েছে, ব্যবসা ভাল চলছে না। তাই ভাড়া মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। পরে তাঁকে জানানো হয়, এখানে সংস্থা আর ব্যবসা করবে না। |
|
তালাবন্ধ সংস্থার অফিস। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
কিন্তু ভাড়ার টাকা মেটাবে কে? তখন বাড়ির মালিক এবং সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরের মধ্যে মৌখিক চুক্তি হয়। ঠিক হয়, অফিসের আসবাবপত্র বেচে ভাড়া মেটানো হবে।
সেই মতো এ দিন দুপুরে অফিসের আসবাব সরাচ্ছিলেন বাড়ির মালিক সুশান্তবাবু। তিনি বলেন, “প্রায় ৬ মাসের বাড়ি ভাড়া বকেয়া রয়েছে।” আর সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরের বক্তব্য, “৬ মাস আগে অফিস বন্ধ হয়েছে। বাড়ি ভাড়ার টাকা বকেয়া ছিল। তাই বাড়ি মালিককে ওই সব সরঞ্জাম সরানোর অনুমতি দিই। রবিবার বাড়ির মালিক অফিসের মধ্যে থেকে সরঞ্জাম বের করেন। সংস্থার কেউ নন।” দুপুরে অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অনিলকুমার দাস নামে এক ব্যক্তি আসবাবপত্র সরানোর কাজে তদারকি করছেন। তাঁর কথায়, “আমার গাড়িতেই এই সব সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বাড়ির মালিক বলেছেন, এই অফিস থেকে সব সরঞ্জাম বের করে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে রাখতে। সেই মতোই কাজ করছি।”
ম্যানেজিং ডিরেক্টরের দাবি, যাঁর যা পাওনা ছিল, তাঁদের তা দিয়ে ৬ মাস আগেই সংস্থার অফিস বন্ধ করা হয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা সেই দাবি মানতে নারাজ। এজেন্টরাও নন। সুভাষনগরে যে বাড়িতে ওই সংস্থার অফিস ছিল, তার পাশে দোকান রয়েছে সুবীর মারিকের। সুবীরবাবুর বলেন, “প্রায় ৩ বছর ধরে এই সংস্থার অফিস চলছে। ক’দিন আগেও এজেন্টরা এসেছিলেন।”
অফিস উঠে গিয়েছে শুনে মাথায় হাত শহরের বাসিন্দা শুভজিৎ দাসের। এক সময় সংস্থার এজেন্টও ছিলেন এই যুবক। তিনি বলেন, “পরে এজেন্টের কাজ ছেড়ে দিই। তবে কতগুলো পলিসি রয়েছে। অফিস উঠে গেছে বলে তো শুনিনি।” ওই যুবকের দাবি “সুদ চাই না। যে অর্থ জমা করেছি, তা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা ওই সংস্থাকে করতে হবে।” |
|
|
|
|
|