দেড় লাখে দাঁত সারিয়েও যখন-তখন মুখে হাত
থা বলার সময়ে হাত দিয়ে বার বারই নিজের মুখটা আড়াল করছিলেন দেবযানী।
সোনমার্গের হোটেল থেকে থানা, আবার সেখান থেকে গান্ধেরবল আদালত যাওয়ার সময়ে বিষয়টা নজরে এসেছিল পুলিশের তদন্তকারী অফিসারদের। প্রথমে মনে হয়েছিল, দেবযানী বোধহয় মুখ ঢাকার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে, পুলিশ অফিসারেরা বুঝেছেন, এটা আসলে দেবযানীর মুদ্রাদোষ।
ছোটবেলা থেকেই মুখচোরা ছিল দেবযানী। কথা বলত মাথা নিচু করে বা হাত দিয়ে মুখ ঢেকে। কারণ একটাই, ছোটবেলা থেকেই সারদা গোষ্ঠীর অন্যতম এই ডিরেক্টরের ওপরের দাঁতের পাটি ছিল উঁচু। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, স্কুলে বন্ধুরা খেপাত বলে দেবযানী তা নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতেন। সে জন্যই কথা বলতেন হাতে মুখ ঢেকে।
ঢাকুরিয়ার মুখোপাধ্যায় পরিবারের এক জন বলেন, “এ জন্য ও কোনও অনুষ্ঠান বাড়িতে যেতে চাইত না। অপরিচিতদের সঙ্গে সহজে মিশতে পারত না। সব সময়ে কথা বলত মাথা নিচু করে বা মুখে হাত চাপা দিয়ে। আমরা চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু খরচে কুলোয়নি।”
সারদা গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই রিসেপশনিস্ট থেকে এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর হয়ে ওঠেন দেবযানী। একই সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে। সুদীপ্ত জেনে ফেলেছিলেন দেবযানীর এই হীনমন্যতার কথা। তত দিনে সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে দেবযানীর ভোল পাল্টে গিয়েছে। দামি শাড়ি-গয়নার সঙ্গে তাঁর উঁচু দাঁত মানানসই হচ্ছিল না। সে জন্য দাঁতের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন সেন সাহেবই।
দন্ত চিকিৎসক সৈকত পাল বলেন, “সার্জিক্যাল ও ‘ব্রেসেস অ্যান্ড ব্র্যাকেট’ পদ্ধতিতে প্রাপ্তবয়স্কদের দাঁতের সামঞ্জস্য ফেরাতে সময় লাগে। ন্যূনতম দেড় থেকে দু’বছর তো বটেই। খরচ প্রায় দেড়-দু লাখ টাকা।”
দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি দাঁতের হাসপাতাল, যেখানে দেবযানীর দাঁতের চিকিৎসা হয়েছিল, তার হিসেবও একই কথা বলছে। প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ করে সামনের উঁচু দাঁত মেরামত করেছিলেন দেবযানী। ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, “ধাপে ধাপে দেবযানীর দাঁতের সামঞ্জস্য ফেরানো হচ্ছিল। তবে এখনও কয়েকটি ধাপ বাকি।” মাস দেড়েক আগেও দেবযানীর দাঁতের ‘ব্রেসেস অ্যান্ড ব্র্যাকেট’ পরীক্ষা করে দেখেছেন ওই চিকিৎসক।
কিন্তু দাঁত অনেকটা সমান হলেও ছোটবেলার অভ্যেসটা কাটাতে পারেননি দেবযানী। এখনও তিনি স্বল্পবাক। সারদা গোষ্ঠীর এক কর্মীর কথায়, “অফিসে দেবযানী খুবই কম কথা বলতেন। কথা শুনতেন মুখে হাত দিয়ে। মাঝেমধ্যে দু’একটা ছোট কথায় উত্তর দিতেন। তা-ও মুখে হাত চাপা দিয়ে।” ওই কর্মী জানান, কোম্পানির জরুরি বৈঠকেও সেন সাহেবের পাশের চেয়ারে প্রায় পাথরের মূর্তির মতো বসে থাকতেন দেবযানী। ওই কর্মী আরও বলেন, “প্রকাশ্যে ওঁকে কখনও সেন সাহেবের সঙ্গে কথাও বলতে দেখা যায়নি।”
হাত দিয়ে থুতনির কাছটা ঢাকার এই বিষয়টা লক্ষ্য করেছেন তদন্তকারী অফিসাররাও। দেবযানীর পড়শিরাও বলছেন, “দাঁত আগের মতো অতটা উঁচু ছিল না। কিন্তু দাঁত ঢাকার পুরনো অভ্যেসটা যায়নি।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.