ঠেকে শিখছেন মদন মিত্র। সারদা-কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন থেকে যে কোনও লোকের সঙ্গে দেখা করা বা ছবি তোলার ব্যাপারে সতর্ক হবেন বলে শনিবার জানিয়েছেন তিনি।
কেন? তার জবাবও দিয়েছেন মদন। তাঁর কথায়, “ওই একটা ছবি নিয়ে যা হচ্ছে, তা দেখেশুনেই বুঝেছি, এ ছাড়া উপায় নেই!” মদনবাবু দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের বিধায়ক থাকাকালীন সেখানে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠায় অর্থসাহায্য করেছিলেন সারদা-গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। ওই অনুষ্ঠানে স্থানীয় বিধায়কের সঙ্গে সুদীপ্তবাবুর ছবিও ওঠে। এর পরে অন্য একটি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে সারদা-কর্ণধারের ভূয়সী প্রশংসা করেন মদন। সুদীপ্ত সেন বিপুল অর্থ তছরুপের দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পরে ওই সব ছবি প্রকাশ্যে এসেছে এবং তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই ঘটনায় ঘরে-বাইরে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েই এমন সিদ্ধান্ত মদনের।
মহাকরণে রাজ্যের পরিবহণ তথা ক্রীড়ামন্ত্রীর ঘরে এমনিতে ভিড় লেগেই থাকে। গাড়িতেও সপার্ষদ সফরেই অভ্যস্ত তিনি। সেই ‘কাছের মানুষ’ মন্ত্রীরই এখন পরিবর্তন হচ্ছে! মন্ত্রীর কথায়, “না, আর মহাকরণের ঘরে যার-তার সঙ্গে দেখা করব না! সরকারি কাজ থাকলেই কেউ ঢোকার অনুমতি পাবেন। নাহ্! গাড়িতেও পুলিশের নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কাউকে তুলব না।” ইতিমধ্যেই তাঁর ব্যক্তিগত সচিবকে জানিয়ে দিয়েছেন, আগন্তুকদের নাম-ধাম ভাল করে জেনে অনুমতি দিতে। নিজের রোজকার জীবনযাত্রাতেও ব্যাপক পরিবর্তন আনার কথা জানিয়ে মদন জানিয়েছেন, এখন থেকে সকালে নিজের বিধানসভা-কেন্দ্র (কামারহাটি), দুপুরে মহাকরণের অফিসের বাইরে তাঁকে বিশেষ কোথাও দেখা যাবে না। সন্ধ্যায় এক ঘণ্টা কাটাবেন তৃণমূল-ভবনে। তার পরে বাকি সময়টুকু ভবানীপুরে দলীয় অফিসে। সন্ধ্যার পরে পাড়া ছেড়ে বিশেষ বেরোবেন না বলেই জানিয়েছেন মন্ত্রী। সভা-সমিতি, বিয়ে, অন্নপ্রাশনের নেমন্তন্ন বা পুজোর উদ্বোধন নিয়েও মদনবাবু এখন সন্ত্রস্ত! তাঁর বক্তব্য, জনপ্রতিনিধিদের তো কত জন সামাজিক অনুষ্ঠানে ডাকেন, ছবি তুলতে চান। সতর্ক মদনের কথায়, “ঘাট হয়েছে! আর সব জায়গায় যাব না, ছবিও সচরাচর তুলব না!” |