|
|
|
|
আনন্দে ড্রেসিংরুমে খেয়ে ফেললাম চারটে পাতুরি
চেনা নাইট অধিনায়কের অচেনা জগৎ আনন্দবাজারে
গৌতম গম্ভীর |
|
|
ইডেনে আমাদের ড্রেসিংরুমে যে খাবারগুলো দেওয়া হয়, এক কথায় অসাধারণ। শুধু আমিই বলছি না। আমার বিদেশি সতীর্থরাও কিন্তু আমার সঙ্গে একমত। হলুদ ডাল, গ্রিলড চিকেন, মাছ খাদ্যরসিকের আর কী চাওয়ার থাকতে পারে? তবে এই ব্যাপারটা কিংস ইলেভেন পঞ্জাব ম্যাচটা জেতার পরই বুঝতে পারলাম। এ রকম নয় যে তার আগে মাঠের খাবার খাচ্ছিলাম না, বা টুর্নামেন্টের মাঝপথে শেফ পালটে গিয়েছিল। আসলে আমার সঙ্গে এই ব্যাপারটা প্রায়ই হয়। জয়ের পর যেন সব খাবারের স্বাদ আরও ভাল হয়ে যায়। বিশেষ করে আমাদের ড্রেসিংরুমে যে ফিশ পাতুরি-টা দেওয়া হয়। শুক্রবার রাতে তো ওটা চার বার নিলাম। ভয় পাবেন না, এখন পর্যন্ত আমার পেট একদম ঠিক আছে। মনে হচ্ছে কাল রাতে পাতুরি নয়, দইভাত খেয়েছি।
আমার মনে হয় দুটো ম্যাচের মধ্যিখানের সময়টা সুইচ-অফ করতে পারা খুব জরুরি। অনেক ক্রিকেটারকে বলতে শুনেছি, তারা ম্যাচের পরেই সুইচ-অফ হয়ে যায়। আমার কিন্তু মনে হয় ব্যাপারটা আংশিক সত্যি। পেশাদার খেলার দুনিয়ায় খেলা থেকে নিজের মনটা পুরোপুরি সরিয়ে ফেলা অসম্ভব। মাঝেমধ্যে খুব অল্প সময়ের জন্য সেটা করা যায়। আমার কথাই ধরুন। শুক্রবার রাতে দু’নম্বর পাতুরিটা চেটেপুটে খাওয়ার সময় ম্যাচ থেকে মনটা একদম সরিয়ে নিয়েছিলাম। কিন্তু ম্যাচের রিপিট টেলিকাস্ট দেখতে দেখতেই আবার ম্যাচে ফিরে এলাম।
শনিবার সকালে আবার একদম সুইচ-অফ করে নিয়েছিলাম নিজেকে। কলকাতায় আমার ঘরের কাচের জানলা দিয়ে হোটেলের ছোট ছোট পুকুরগুলো দেখছিলাম। সকালটা বেশ শান্ত, আশাবাদী ছিল। নীল আকাশের নীচে সবুজ ঘাস আর পদ্মের পুকুর মনে হচ্ছিল বুঝি পুরোটাই ক্যানভাসে আঁকা। হঠাৎ করে ছবিটায় এক জন মানুষ ঢুকে পড়ল। দেবব্রত দাস। ওকে দেখেই আবার ক্রিকেটে ফিরে এলাম।
দেবব্রত-কে আমরা দাসি বলে ডাকি। খুব চুপচাপ ছেলে। বেশির ভাগ সময়ই ওকে পাবেন একা একা কোথাও বসে নিজের ফোন বা আই-প্যাডে কুইজের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছে। যাই হোক, শনিবার সকালে ওকে দেখেই ওর কিটব্যাগের কথা মনে পড়ে গেল। ব্যাগটার গায়ে পেন দিয়ে বড় বড় করে ও লিখেছে, ‘মাই পাওয়ার হাউস’। না, এটার সঙ্গে কোনও গল্প জড়িয়ে নেই। মনে হয় দাসি পজিটিভ মনোভাব নিয়ে থাকতে চাইছে। কিটব্যাগের উপর লেখা শব্দগুলো যেটা করতে সাহায্য করছে। ওকে এক বার ওই লেখার কারণটা জিজ্ঞেস করে উত্তরে ওর সেই চেনা হাসিটা পেয়েছিলাম। তবে সকালে ওর পাওয়ার হাউসের কথা ভাবতে ভাবতে অনেক কিছু মনে হচ্ছিল।
সবে চেন্নাই পৌঁছে এই কলামটা লিখছি। এখানকার নতুন এয়ারপোর্টটা বেশ ভাল। সারা দেশে যে ভাবে সুন্দর-সুন্দর এয়ারপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে, ভাবলে দারুণ লাগে। বুঝতে পারছি আমাদের সরকার চায় বিদেশি লগ্নিকারীদের এ দেশে নিয়ে আসতে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার, কেতাদুরস্ত এয়ারপোর্ট হল গোটা জিগস পাজ্লের একটা ছোট টুকরো। পুরো ছবিটায় রয়েছে একে অন্যের প্রতি আমাদের সম্মান, বিশেষ করে মেয়েদের প্রতি। ‘মর্দ’-এর মতো উদ্যোগ নিয়ে যে ব্যাপারটা তুলে ধরেছে ফারহান আখতার। আশা করব, নকল গোঁফে তা দিতে দিতে আসল ব্যাপারটা হারিয়ে যাবে না। দেখা যাক।
ও হ্যাঁ, দাসির প্যাডেও একটা কথা লেখা আছে ‘আমাকে কখনও ছুঁয়ো না।’ এখানে কিন্তু একটা গল্প রয়েছে। পরে কোনও দিন আপনাদের বলব। |
|
|
|
|
|