পণ্য-পরিষেবা কর চালু হলে রাজ্যের রাজস্ব ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন সুশীল মোদী। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত কমিটির চেয়ারম্যান এবং বিহারের উপ- মুখ্যমন্ত্রী মোদী মনে করেন, এই প্রস্তাবে কেন্দ্র রাজি হলে পণ্য-পরিষেবা কর ব্যবস্থা কার্যকর করার ক্ষেত্রে সব থেকে বড় বাধা দূর হয়ে যাবে।
কেন্দ্রকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, বাকি যে-সব সমস্যা রয়েছে, তার মধ্যে ৮০% ক্ষেত্রে কমিটি ইতিমধ্যেই সমাধানসূত্র বার করেছে।
শনিবার কলকাতায় ভারত চেম্বার অফ কমার্স আয়োজিত সভায় মোদী বলেন, “পণ্য-পরিষেবা কর চালু হলে রাজস্ব আয় কমতে পারে বলে রাজ্য সরকারগুলির আশঙ্কা। তা দূর করাই এখন সর্বাগ্রে জরুরি। তাই আমাদের প্রস্তাব, নতুন কর ব্যবস্থায় রাজ্যগুলির আয় কমলে, সেই বাবদ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করুক কেন্দ্র। তারা রাজি হলে পণ্য পরিষেবা কর চালু করতে দেরি হবে না।”
কর বাবদ আয় কমার জন্য কেন্দ্রের ক্ষতিপূরণ দেওয়া অবশ্য নতুন কিছু নয়। যখন যুক্তমূল্য কর বা ভ্যাট চালু করা হয়, তখনও রাজ্যের আয় কমার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছিল কেন্দ্র। এ দিন মোদী বলেন, ‘‘প্রথমে ঠিক হয়েছিল তিন বছর ধরে কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে ওই ক্ষতিপূরণ দেবে। কিন্তু ভ্যাট চালু হওয়ার পর বিভিন্ন রাজ্যের আয় কমার বদলে ক্রমশ বাড়তে থাকে। ফলে দ্বিতীয় বছর থেকেই ওই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আয় প্রয়োজন হয়নি।”
পণ্য-পরিষেবা করের ক্ষেত্রে কত দিন কেন্দ্রকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে? মোদী বলেন, “আমাদের প্রস্তাব, পাঁচ বছরের জন্য ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা ঘোষণা করা হোক। তবে আমার বিশ্বাস, এই ক্ষেত্রেও পুরো পাঁচ বছর ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। কারণ, পণ্য-পরিষেবা কর ব্যবস্থা চালু হলে প্রাথমিক ভাবে কিছু সমস্যা থাকলেও ক্রমশ রাজ্যগুলির ওই কর বাবদ রাজস্ব বাড়তে থাকবে।”
ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা ছাড়া পণ্য -পরিষেবা কর চালু করা কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন মোদী। কেন? এই কর চালু করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। প্রয়োজন হবে সংসদের দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন। রাজ্যগুলির সমর্থনও চাই। মোদীর মন্তব্য, “ইউপিএ সরকারের পক্ষে ওই সমর্থন এই মুহূর্তে জোগাড় করা প্রায় অসম্ভব। তাই ক্ষতি -পূরণের ব্যবস্থা করেই সমস্যা মেটানোর কথা কেন্দ্রের ভেবে দেখা উচিত।”
প্রায় ৮০ শতাংশ সমস্যার সমাধানসূত্র পাওয়া গেলেও এখনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে রফাসূত্র বার করতে হবে বলে মোদী উল্লেখ করেন। যেমন, কোন কোন পণ্যের উপর পণ্য-পরিষেবা কর বসবে না, তা নিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের একটি অভিন্ন তালিকা তৈরি করতে হবে। বর্তমানে রাজ্যগুলিতে ভ্যাটের ক্ষেত্রে সবোর্চ্চ ৯০টি পণ্যের উপর কর বসে না। কিন্তু কেন্দ্রীয় কর সেনভ্যাট-এর তালিকায় ৩০০টি পণ্য করের আওতার বাইরে রয়েছে।
এ ছাড়া করের কটি স্তর করা হবে এবং তার হারই বা কী হবে, সে নিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে মোদী মন্তব্য করেন। |