এ বার রিসর্টের খোঁজে পুলিশ
ছুটির ফাঁদেও প্রতারিত সারদার আমানতকারীরা
বিলাসবহুল বিভিন্ন রিসর্টের রঙিন ছবি টাঙানো রয়েছে অফিস জুড়ে। রয়েছে নির্মীয়মাণ রিসর্টের ছবি-ও। গ্রাহকদের বলা হয়েছিল, কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রিসর্টে ঘুরতে যেতে লগ্নি করতে হবে তাদের ভ্রমণ সংস্থায়। লগ্নি করা যেতে পারে নির্মীয়মাণ রিসর্টেও। বিনিময়ে রিসর্ট তৈরি হওয়ার পরে তাঁরা সেখানে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। না-হলে ফেরত দেওয়া হবে সুদসমেত লগ্নির টাকা।
পুলিশের দাবি, এই সব টোপ দিয়েই ভ্রমণ ব্যবসার ফাঁদ পেতেছিল সারদা। তাতেই পা দিয়ে কয়েকশো কোটি টাকা খুইয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এক পুলিশকর্তা জানান, সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে জেরা করেই এই সব তথ্য মিলেছে। প্রতারিত গ্রাহকের সংখ্যা অন্তত কয়েক হাজার বলে পুলিশের দাবি।
গোয়েন্দারা জানান, গত কয়েক বছরে ভ্রমণ ব্যবসাতেও ফুলে-ফেঁপে উঠেছিল সারদা গোষ্ঠী। ভ্রমণ ব্যবসার বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে বাজার থেকে টাকা তুলেছিল। তদন্তকারীরা সারদা গোষ্ঠীর কয়েক জন এজেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, গত কয়েক বছর ধরে আমানতকারীদের ‘সারদা টু্যরস অ্যান্ড ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর বদলে ‘সারদা গার্ডেন হোটেল অ্যান্ড রিসর্ট প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে আর এক সংস্থায় লগ্নি করানো হত।
গোয়েন্দাদের দাবি, শান্তিনিকেতন, লাটাগুড়ি-সহ বিভিন্ন পর্যটনস্থানে সংস্থার নিজস্ব রিসর্ট রয়েছে বলে সারদার এজেন্টরা বিনিয়োগকারীদের বোঝাতেন। যে রিসর্টের ছবি তাঁদের দেখানো হত সেগুলির মালিকানা আদৌ সারদার কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন অফিসারেরা। সারদা গোষ্ঠীর ভ্রমণ সংস্থার প্রধান কার্যালয় ছিল শেক্সপিয়র সরণিতে। সেই অফিসও চলতি মাসের ১৬ তারিখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই অফিসের কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক ও বিভিন্ন ফাইল-ও পরীক্ষা করে দেখছেন তদন্তকারীরা।
কী ভাবে নিজেদের ভ্রমণ সংস্থার নামে টাকা তুলত সারদা?
গোয়েন্দারা জানান, কোনও বিনিয়োগকারী দেড় বছর পরে কাশ্মীর বেড়াতে যেতে চাইলে, তাঁকে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে জমা দিতে হত। দেড় বছর পর সুদ-সহ যে টাকা মিলবে তাতেই তাঁকে কাশ্মীর ঘুরিয়ে আনা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিতেন সারদা কর্তৃপক্ষ। বলা হত, যেহেতু সেই আমানতকারী দেড় বছর ধরে সারদা গোষ্ঠীতে টাকা লগ্নি করেছেন, তাই বেড়ানোর সময় কম খরচে তাঁকে বিলাসবহুল রিসর্টেও রাখা হবে। বেড়ানোর খরচও হবে বাজার দরের থেকে অনেক কমে।
পুলিশ জানতে পেরেছে, ভ্রমণ ব্যবসায় যাঁরা লগ্নি করতেন, তাঁদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হত কোনও কারণে সফর বাতিল হলে, নির্দিষ্ট সময়ে সুদ-সহ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। গোয়েন্দাদের দাবি, গোড়ার দিকে ভ্রমণ বাতিল হলে টাকা সুদ-সহ ফেরত পেতেন আমানতকারীরা। তবে গত কয়েক মাসে এমন অনেক ঘটনাই ঘটেছে, যখন আমানতকারীদের বেড়াতেও নিয়ে যাওয়া হয়নি, আবার সুদ-সহ টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি।
এমনই এক জন, বিরাটির বাসিন্দা অসীম ঘোষ। তিনি শনিবার বলেন, ‘‘ডুয়ার্সে বেড়ানোর জন্য ১৫ মাস ধরে টাকা লগ্নি করেছিলাম। ‘সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ডুয়ার্সের রিসর্টে কম খরচে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেবে। টাকা লগ্নি করা শেষ হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। গরমের ছুটিতে ডুয়ার্সে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেড়ানোও হল না, টাকাও ফেরত পেলাম না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.