চলছে টাকার খোঁজ
পুলিশের জেরায় মুখ খুলতে নারাজ সারদার দুই ধৃত কর্মী
মানতকারীদের থেকে সংগৃহীত টাকা কে নিয়মিত নিয়ে যেতেন, কোন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে তা রাখা হত, পুলিশের হাজার জেরাতেও তা বলতে চাইছেন না বর্ধমানে ধৃত সারদা গোষ্ঠীর দুই পদাধিকারী।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এজেন্ট হয়ে ঢুকেই কাজ দেখিয়ে পদাধিকারী হয়ে উঠেছিলেন ফিল্ড অফিসার জয়ন্ত চৌধুরী ছিলেন এবং ডেভলপমেন্ট সুপারভাইজার মাধব দাস। জি টি রোডে বর্ধমান শাখা মোটামুটি এঁরাই দেখভাল করতেন। শাখার ম্যানেজার, আউশগ্রামের বাসিন্দা অমল পাল বরং অফিসে কমই আসতেন।
বর্ধমান শহরে সারদার ওই অফিস নেওয়া হয়েছিল সারদার চেয়ারম্যান সুদীপ্ত সেনের নামে। গত ডিসেম্বরে তিনি শেষ বার বর্ধমানে আসেন। টাউনহল ভাড়া করে এজেন্টদের নিয়ে বিশাল সমাবেশও করেছিলেন। পয়লা বৈশাখের পরেই তাঁর পালানোর খবরে যখন রাজ্য উত্তাল, হিরাগাছি গ্রামে আমানতকারীদের ক্ষোভ সামাল দিতে যান জয়ন্তবাবু এবং মাধববাবু। সেখানে গিয়ে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেন, সংস্থার তরফে যদি আমানতের টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব না-ও হয়, তাঁরা দু’জনেই তা ফেরত দেবেন। ফলে, তাঁদের হেফাজতে বিপুল অর্থ থাকার সম্ভবনা রয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ।
জেলা পুলিশের এক অফিসার শুক্রবার জানান, সারদার অফিস থেকে বাজেয়াপ্ত করা নথিপত্রে যেটুকু হিসেব মিলেছে, তাতে ২০১২-১৩ সালের মধ্যেই প্রায় ১৬ কোটি টাকা তোলা হয়েছিল। সেই টাকার কতটা কলকাতায় পাঠানো হয়েছে, কতটাই বা বর্ধমানে ওই দুই পদাধিকারীর হাতে রয়েছে, সেটা জানা জরুরি। বর্ধমান ছাড়াও মন্তেশ্বর, মালডাঙা বাসস্ট্যান্ড, কাটোয়া, পূর্বস্থলী, ভাতার ইত্যাদি জায়গায় সারদার নানা সংস্থার অফিস ছিল। কাটোয়া ও কাঁকসায় সংস্থার দুই অফিস অবশ্য ১২ এপ্রিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই শাখাগুলিতেও তল্লাশি চালানোর কথা ভাবছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার হিরাগাছি থেকেই জয়ন্তবাবু এবং মাধববাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে দিনই তাঁদের আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। কিন্তু দু’জনের বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগ করেছিলেন, হিরাগাছির সেই মানিক ঘোড়াই সে দিনই সিজেএম আদালতে হাজির হয়ে হলফনামা দিয়ে বলেন, তিনি আর মামলাটি চালাতে চান না। মানিকবাবু পুলিশকে বলেছেন, গ্রামের মানুষ তাঁকে চাপ দিচ্ছেন। অনেকে বলছেন, এই মামলার জন্যই তাঁদের আমানত ফেরত পাওয়ার সম্ভবনা কমেছে। তবে ফৌজদারি মামলা এক বার দায়ের হলে তা চাইলেই প্রত্যাহার করা যায় না, এই যুক্তিতে সিজেএম তাঁর আবেদন নাকচ করে দেন।
সারদা ছাড়াও আর কোন কোন সংস্থা সাধারণ মানুষের থেকে টাকা তুলেছে, তার তালিকা বানাচ্ছে জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার কাছে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করেছে জেলা এনফোর্সমেন্ট বিভাগ। তাতে বলা হয়েছে, জেলায় চালু থাকা ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার সংখ্যা ২৫৭। গত বছরের শেষে বা এই বছরের গোড়ায় অবশ্য ৩২টি এমন সংস্থা উঠে গিয়েছে।
ওই তালিকায় দেখা যাচ্ছে, মেমারিতে ২৯টি এমন সংস্থার মধ্যে ১০টি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জামালপুরে চলছে ২৪টি সংস্থা। পূর্বস্থলীতে রেকর্ড সংখ্যক, ৫৮টি ভুঁইফোঁড় লগ্নি সংস্থা চলছে। কাটোয়ায় ৫২টি সংস্থার মধ্যে ৬টি কাজকর্ম গুটিয়ে নিয়েছে। কালনায় ৪২টি সংস্থার মধ্যে ৮টিতে তালা পড়েছে। ভাতারে রমরমিয়ে চলছে ২৫টি সংস্থা। রাজ্য সরকারের নির্দেশে রাজ্য এনফোর্সমেন্ট বিভাগের আইজি জয়ন্তকুমার বসুর কাছে এই তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে শুক্রবার। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া লগ্নি সংস্থাগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, যেমন বাজার থেকে সেগুলি কত টাকা তুলেছে, কত জন আমানতকারী প্রতারিত হয়েছেন ইত্যাদি জানা সম্ভব হয়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.