বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া নদী দিয়ে ঘেরা জারিধরলা ও দরিবস গ্রামের সমস্যা খতিয়ে দেখে উন্নয়নের রূপরেখা তৈরির জন্য সমীক্ষা করতে উদ্যোগী হয়েছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য, কারিগরি ও বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কর্তারা গ্রামে ঘুরে ওই সমীক্ষার কাজ করবেন। এর পরে সমীক্ষা রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বামফ্রন্টের সময় ন্যূনতম উন্নয়ন না হওয়ায় দুর্দশায় দিন কাটছে জারিধরলা ও দরিবস গ্রামের। সেখানে পরিষেবা বলে কিছু নেই। কিছুদিন আগে ওই দুটি গ্রাম ঘুরে দেখেছি। এর পরে উন্নয়নের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার জন্য জেলাশাসককের সঙ্গে কথা বলি। সমীক্ষা শেষ হলে রিপোর্ট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে উন্নয়নে রূপরেখা তৈরি হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনহাটা মহকুমার প্রত্যন্ত এলাকা জারিধরলা ও দরিবসে যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শিক্ষা, পানীয় জল, চিকিৎসা, বিদ্যুৎ কোনও পরিষেবা নেই। সেখানে প্রায় ৬ হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামে ঢুকতে হয় সিঙ্গিমারি নদী নৌকায় পার হয়ে। এর পরে প্রায় ২ কিমি বালির চর হেঁটে যেতে হয়। গ্রামের সীমানার অন্যদিকে গিরিধারী নদী। বাঁধ না থাকায় ফি বছর বন্যায় জলে ভাসে এলাকা। অনেকে নদী পার হয়ে বাংলাদেশের মোগলহাট এলাকায় যায়। পারাপার প্রসঙ্গে কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেছেন, “পরিষদীয় সচিবের সঙ্গে ওই এলাকার সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অন্তত চারটি দফতরের কর্তাদের গ্রামে ঘুরে রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে।” |
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জারিধরলা এবং দরিবস গ্রামে দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১টি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র থাকলেও হাই স্কুল নেই। প্রাথমিক স্কুলের পরে অনেকে নিরুপায় হয়ে লেখাপড়া ছেড়ে দিচ্ছে। এলাকায় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। কাছাকাছি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বলতে দিনহাটার গীতালদহ প্রায় ৩ কিমি দূরে। বর্ষায় নদী ফুঁসে উঠলে দিনেও যাতায়াত করা সম্ভব হয় না। রাতে ভরসা বলতে হাতুড়ে চিকিৎসক। সন্ধ্যার পরে গ্রাম অন্ধকারে ডুবে থাকে। কয়েক মাস আগে এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য সমীক্ষা হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। জারিধরলার বাসিন্দা আবুল কালাম কাবুল হোসেন জানান, বছরের পর বছর সমস্যা বেড়ে চলেছে। আশ্বাস ছাড়া কিছু মেলেনি। এবার দেখা যাক কি দাঁড়ায়। জেলাশাসক বলেন, “নদী বিচ্ছিন্ন ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য টাওয়ার বসানোর মত কিছু পরিকাঠামো দরকার। সৌরবাতি কিংবা অন্য কোন ভাবে বিকল্প ব্যবস্থা করা যায় কিনা দেখা হচ্ছে।” দিনহাটার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক উদয়ন গুহ দাবি করেন, বাঁধের কাজ সহ অনেক কিছু হয়েছে। |