সুদীপ্ত সেন তথা সারদা রিয়েলটির সুনাম করে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কাছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরীর (ডালুবাবু) পাঠানো চিঠি অস্বস্তিতে ফেলে দিল কংগ্রেসকে। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে প্রথমে সারদা-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন মালদহের কংগ্রেস সাংসদ ডালুবাবু। কিন্তু গত বছর মার্চে সেই ডালুবাবুই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তাঁর পুরনো অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন।
শুধু তা-ই নয়, চিঠিতে তিনি এ-ও বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে সারদা খুব সাফল্যের সঙ্গে ব্যবসা করছে। সারদা রিয়েলটি কোনও চিট ফান্ড সংস্থা নয়। তাই এটিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক্তিয়ারের বাইরে রাখা হোক।’
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর ওই চিঠিকে অস্ত্র করেই এখন কংগ্রেসকে পাল্টা চাপে ফেলতে চাইছে তৃণমূল। আজ রাজ্যসভায় ওই চিঠির প্রসঙ্গ তুলে সরব হন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ ব্রায়েন। পরে তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী কেন রাতারাতি অবস্থান বদল করলেন, তা স্পষ্ট করতে হবে। সারদা-র সঙ্গে তাঁর কি দেওয়া-নেওয়া হয়েছিল, তা-ও প্রকাশ করতে হবে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে হবে আবু হাসেম খান চৌধুরীকে।” ডেরেকের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ওই সব চিঠির মাধ্যমে ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারির দায় এখন প্রধানমন্ত্রীর দোড়গোড়াতেই পৌঁছে গিয়েছে। ফলে মনমোহন সিংহকেও তাঁর মন্ত্রিসভার সতীর্থের ভূমিকা নিয়ে জবাবদিহি করতে হবে।
ডালুবাবুর চিঠি কংগ্রেসকে নিঃসন্দেহে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। ঘরোয়া আলোচনায় অধীর চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সির মতো কংগ্রেস নেতারা স্বীকার করে নিচ্ছেন, ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে অস্ত্র তাঁরা শানাচ্ছিলেন, সেই অস্ত্র অনেকটাই ধারহীন করে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো ডালুবাবুর চিঠি। তবে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা শাকিল আহমেদ বলেন, “সারদার কেলেঙ্কারি নিয়ে সিবিআই তদন্ত চাইছে কংগ্রেস।
এই কাণ্ডে কে দোষী, আর কে নির্দোষ সেই তদন্তেই তা প্রমাণ হয়ে যাবে।” তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি সত্যিই মানুষের ভাল চান, তা হলে এখনই সিবিআই তদন্তের আর্জি জানান। নইলে মানুষের মনে এই সংশয়ই তৈরি হচ্ছে যে, এই কেলেঙ্কারি থেকে তৃণমূল নেতাদের আড়াল করতেই তিনি সিবিআই তদন্ত চাইছেন না।” |