দীর্ঘদিন পরিষ্কার না-হওয়ার জেরে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের ভুগর্ভস্থ জলাধার ব্যাঙাচির আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি প্রমোদনগরে পুরসভার ট্যাপকল থেকে ব্যাঙাচি বার হওয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখতে গিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে বিষয়টি। গত সোমবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পুরসভার তরফে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অবিলম্বে হাসপাতালের জল সরবরাহ ব্যবস্থার সমস্ত জলাধারের পরিস্থিতি তাদের খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই জলাধারের জল ব্যবহার করা আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। হাসপাতালের তরফে ওই জলাধার থেকে জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই জলাধারে পাইপ লাইনের সঙ্গে প্রমোদনগরে জল সরবরাহ লাইনের যোগ রয়েছে। পুরসভার তরফে সে কারণে হাসপাতালের ওই জলাধারে জল সরবরাহের পাইপ সিল করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের সুপার সঞ্জীব মজুমদার বলেন, “পুরসভার তরফে জলাধার সাফ করতে বলা হয়েছে। জলাধার পরিষ্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।” কাজে কলকাতায় রয়েছেন সঞ্জীববাবু। তিনি জানান, কলকাতা থেকে তিনি নিজেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উদাসীন বলেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। তাদের উচিত অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।” জরুরি পরিস্থিতি আপাতত পুরসভার তরফেই ওই ভূগর্ভস্থ জলাধার পরিষ্কার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেখান থেকে ইতিমধ্যেই প্রচুর ব্যাঙাচি বার করা হয়েছে। ব্যাঙাচি ছাড়াও জলাধার শ্যাওলায় ভরেছে বলে হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে।
হাসপাতালের সুপারের দফতরের কাছে ভূগর্ভস্থ ওই জলাধারে শিলিগুড়ি পুরসভা তরফে জল সরবরাহ করা হয়। সেখান থেকে পাম্প করে জরুরি বিভাগের তিন তলার জলাধারে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জরুরি বিভাগ ছাড়া ওই ভবনে সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট, কাডির্য়াক কেয়ার ইউনিট এবং অন্যান্য অংশে জল সরবরাহ করা হয়। ভুগর্ভস্থ ওই জলাধারেই প্রচুর পরিমাণে ব্যাঙাচি জন্মেছে বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন ধরে জলাধারটি পরিষ্কার করা হয় না বলেও কর্মীদের একাংশ অভিযোগ তুলেছেন। তা ছাড়া ওই জলই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরবরাহ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মীদের একাংশ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ওই জলাধার দেখভালের দায়িত্ব কার ব্যাঙাচি বার হওয়ার ঘটনার পর তা নিয়ে চাপানউতোর চলছে পূর্ত দফতর এবং জনস্বাস্থ্য এবং কারিগরি বিভাগের মধ্যে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র সন্দীপ ঘোষ বলেন, “হাসপাতালের ওই জলাধার পূর্ত বিভাগের তরফে তৈরি করা হয়েছে। তারাই দেখভাল করেন।” পূর্ত দফতরের তরফে কেন জলাধারটি পরিষ্কার করার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়নি সেই প্রশ্নও উঠেছে। পূর্ত দফতরের সহকারি বাস্তুকার সুভাষ দাস জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তিনি জানাবেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জলাধার পরিষ্কারের জন্য আগাম জানানো হলে তারা ওই কাজ করে দিতে পারতেন। |