গরম পড়তেই শিলিগুড়িতে শুরু হয়েছে লোডশেডিং। তার উপরে মেরামতির কারণে বৃহস্পতিবার পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ করেছে শিলিগুড়ি পুরসভা। ফলে, গোটা শহরেই ক্ষোভ দানা বাঁধছে। বিশেষত, যে সব আবাসনে কুয়ো নেই, সেখানকার আবাসিকরা কী ভাবে দৈনন্দিন জলের চাহিদা পূরণ করাবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। আজ, শুক্রবার বিকেলের আগে জল মিলবে না। তাই শহরের শতাধিক বস্তি এলাকার সমস্যা তীব্র হয়েছে। কারণ ওই এলাকাগুলিতে পানীয় জলের সুষ্ঠু বিকল্প বন্দোবস্ত নেই। বিকল্প জল সরবারহের ব্যবস্থা না-করে পুরসভা দুদিন ধরে জল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যও পুরসভার ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “বিকল্প বন্দোবস্ত করা জরুরি ছিল।”
কেন দু’দিন জল বন্ধ থাকবে? পুরসভার জল বিভাগের মেয়র পারিষদ পম্পা দাস বলেন,“ফুলবাড়ির কাছে থাকা ব্যারাজে মেরামতির জন্য শুক্রবার সারাদিন ও শনিবার সকালে জল উঠবে না পুরসভার জলাধারে। শহরবাসীকে আগে থেকে জল ধরে রাখার জন্য বলা হয়েছে”। কিন্তু জল ধরে রাখার জন্য বৃহস্পতিবার বেশি সময় জল দেওয়ার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি পুরসভার তরফে। দীর্ঘদিন থেকে নতুন জলপ্রকল্প নিয়ে নানা পরিকল্পনা থাকলেও তা নিয়ে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দিঘি খনন জলাধার নির্মাণ ইত্যাদি পরিকল্পনার কথা থাকলেও কোন কাজই শুরু হয়নি। তবে দু’দিন জল না থাকায় শহরবাসীর কাছে বিকল্প কী হতে পারে তা নিয়ে কোন দিশা নেই পুরসভার কাছে। বর্তমানে ২২ হাজার ৬৩ টি বাড়িতে পুরসভার জলের সংযোগ রয়েছে। রয়েছে ১৩৬৮ টি স্ট্যান্ডপোস্ট।
এই ঘটনার সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা। তিনি বলেন,“লাগাতার দু’দিন ব্যারেজের কাজ না করলেই হতো। দু-তিন দফায় কাজ করালে গরমের সময়ে এতটা সমস্যা হতো না। এ বিষয়ে ব্যারেজের কর্তাদের সঙ্গেও আগাম কথা বলা দরকার ছিল।” তাঁর অভিযোগ, শিলিগুড়ি বাসীদের গ্রীষ্মের মরসুমে দু’দিন নির্জলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়।
তবে পুরসভার বিরোধী দল নেতা নুরুল ইসলাম শহরকে নির্জলা রাখার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলেছেন, “এটা পুরবোর্ড যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁদের বিষয়।” তাঁর কটাক্ষ, পুরসভায় তো সবই প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে তা হলে জল বন্ধ হলে আশ্চর্য কী! |