টাকা ফেরত না-দিয়ে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া এক ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার তিন কর্ণধারের বিরুদ্ধে ফালাকাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন এক আমানতকারী। ফালাকাটা থানার আইসি ধ্রুব প্রধান জানান, আরএসএস গ্রুপ নামে ওই সংস্থার তিন কর্তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ করার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে।
আমানতকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সংস্থার তরফে গত বছর অগস্ট মাসে ফালাকাটা শহরের শাখা অফিস খুলে শতাধিক এজেন্ট নিয়োগ করা হয়। এর পরে শেয়ার বাজারে টাকা খাটিয়ে মাসে চড়া হারে পনেরো মাস সুদ দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে টাকা তোলা হয়। সুনির্মল রায় নামে এক আমানতকারী এ দিন লিখিতভাবে পুলিশকে জানান, “মার্চ মাসে ওই সংস্থায় ১০ হাজার টাকা জমা করেছি। ২২ এপ্রিল দেখি অফিসে তালা।” পুলিশ জানায়, অভিযুক্তরা হলেন সংস্থার চিফ ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজকুমার ঘোষ এবং দুই ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিবচরণ বর্মন ও শঙ্কর বর্মন। প্রথম জনের বাড়ি মালদহে। বাকিরা কোচবিহার জেলার বাসিন্দা।
সংস্থার এজেন্টদের অভিযোগ, গত ২৫ মার্চ থেকে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া বন্ধ। হরলাল সাহা এক এজেন্ট জানান, শেয়ার মার্কেটে সোনা, রুপো কেনাবেচা করা হয় বলে সংস্থার তরফে বোঝানো হয়। কয়েক কোটি টাকা তুলে এখন কর্তারা গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ ফোন তুলছেন না। এদিনই টাকা না পেয়ে ফালাকাটার অন্য এক ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থার দফতরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আমনতকারী ও এজেন্টরা। সংস্থার ম্যানেজারকে বিক্ষোভ দেখানোর পরে আমানতকারীরা শহরের রবীন্দ্রনগর এলাকায় সংস্থার এক কর্তার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কোচবিহার শহরে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়। ওই সংস্থার এজেন্টরা জানান, চড়া সুদের আশ্বাস দিয়ে প্রচুর টাকা তোলা হয়েছে। গত জানুয়ারি মাস থেকে লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। কোচবিহারের অফিস বন্ধ করে দেওয়া হলেও ফালাকাটার শাখা অফিস খোলা ছিল। সংস্থার এজেন্ট প্রলয়শেখর বর্মন বলেন, “কোচবিহারের বিমান ঘাঁটিতে প্লেন চালানো সহ বিএড কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। টাকা না পেয়ে আমানতকারীরা চাপ দিচ্ছে। কী করব বুঝতে পারছি না।” যদিও সংস্থার ফালাকাটা শাখার ম্যানেজার বিষ্ণু দাস জানান, সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা চলছে। |