চার বছর পরে জেলায় ফিরলেন সুবাস ঘিসিং
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার রোষের মুখে পড়ে বছর চারেক আগে দার্জিলিং পাহাড় ছেড়ে জলপাইগুড়ি শহরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন জিএনএলএফ প্রধান সুবাস ঘিসিং। এখন পাহাড় অপেক্ষাকৃত শান্ত। উপরন্তু, পাহাড়ে এখনও মোতায়েন রয়েছে ২ কোম্পানি সিআরপি। মোর্চা বিরোধী দলও মিটিং-মিছিল করছে নির্বিঘ্নেই। এমতাবস্থায়, ফের পাহাড়ে রাজনৈতিক কাজকর্ম পরিচালনার সুবিধার জন্য জলপাইগুড়ি ছেড়ে নিজের জেলা দার্জিলিঙের মাটিগাড়ায় নতুন ঠিকানায় এলেন ষাটোর্ধ্ব সুবাস ঘিসিং।
শুক্রবার দুপুরে শিলিগুড়ি শহরের কাছে মাটিগাড়ায় লিচুবাগানের একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করলেন জিএনএলএফ সভাপতি ঘিসিং। সেখানে পৌঁছে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের তো বটেই, বাসিন্দাদের মধ্যেও লাড্ডু বিলি করেন ঘিসিং। তিনি বলেন, “পাহাড়ের পরিস্থিতি এখন অনেক পাল্টেছে। এই সরকার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছিল। সেই কথা এখনও রেখেছে। বিশ্বাসঘাতকতা করেনি। যে অশুভ শক্তি পাহাড়ের উপরে প্রভাব ফেলেছিল তা এখন অদৃশ্য হয়েছে। আমি শীঘ্রই পাহাড়েও যাব।”
জলপাইগুড়ির বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন সুবাস ঘিসিং।
তবে পাহাড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলেও এখনই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে যেতে চান না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ঘিসিং। তাঁর কথায়, “সব কিছুরই একটা সময় রয়েছে। গোর্খাল্যাণ্ডের দাবি আমাদেরই ছিল। এখন অন্য কেউ সেটা ভুল প্রয়োগ করছেন। আমাদের আন্দোলনেই কেন্দ্রীয় সরকার গোর্খাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। জিটিএ-র সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই। তা যে কোনও মুহূর্তে বাতিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
তবে গোর্খাল্যাণ্ডের দাবিতে পাহাড়ে ফের অস্থিরতা তৈরি হোক সেটা তিনি চান না বলে জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, “গোর্খাল্যাণ্ড নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের অবস্থান বুঝতে হবে। শুধু আন্দোলন করে অস্থিরতা তৈরি করলে পাহাড়ের উন্নয়ন হবে না। দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিলের সংবিধান স্বীকৃতি রয়েছে। কাউন্সিলই পাহাড়ের সব বাসিন্দাদের উন্নয়নের হাতিয়ার হতে পারে। আপাতত সেই দাবিতেই আন্দোলন চলবে।” আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনেও জিএনএলএফ লড়বে বলে ঘিসিং এ দিন জানান।
পাহাড়ে সিআরপি মোতায়েনের পরে জিএনএলএফ মিটিং করছে। তাতে ভিড়ও হচ্ছে। সে কথা জানেন জিএনএলএফ প্রধানও। তিনি বলেন, “দলের লোকজনদের এখন আমার সঙ্গে দেখা করতে জলপাইগুড়িতে যাতায়াত করতে হয়। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং থেকে জলপাইগুড়ি যাতায়াত করা বেশ কষ্টসাধ্য। সে জন্য মাটিগাড়ায় আপাতত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাতে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে।”
মাটিগাড়ার বাড়িতে এসে মিষ্টি বিতরণ।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে জলপাইগুড়ির অরবিন্দনগরের ভাড়া বাড়ির মালিক সুশীল সরকারকে ডেকে পাঠান ঘিসিং। তাঁকে জানিয়ে দেন, শুক্রবার সকালেই তিনি পাকাপাকি ভাবে বাড়ি ছেড়ে দেবেন। বৃহস্পতিবার রাতেই জেলা পুলিশকেও নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি। সেই মত এদিন সকালেই ঘিসিংকে নিয়ে যেতে জেলা পুলিশের পাইলট ভ্যান এবং নিরাপত্তারক্ষীরা যান। দুপুর সাড়ে ১২টার সময়ে জলপাইগুড়ি থেকে রওনা দেন তিনি। ঘিসিং চলে যাচ্ছেন শুনে অরবিন্দনগরের তাঁর প্রতিবেশীরাও বাড়ির সামনে ভিড় করেন। যাওয়ার আগে সকলকে তিনি দোতলায় নিজের ঘরে ডেকে পাঠান। এলাকার মহিলা ও শিশুদের হাতে একটি মিষ্টির বাক্স এবং সঙ্গে ১০০ টাকা উপহার দিয়েছেন তিনি। দেদার চকলেট বিলিয়েছেন।

—নিজস্ব চিত্র।


পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.