দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
থমকে নয়া প্রকল্প
দখলদারির গ্রাসে
খলদারির কবল থেকে এক বার মুক্ত হয়েছিল টলি নালার পাড় সংলগ্ন এলাকা। ২০০৮ নাগাদ জমিটি দখলমুক্ত করে প্রশাসন। কিন্তু এখন আবার ওই এলাকা ফের দখলদারির গ্রাসে চলে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা।
গড়িয়ার আজাদ হিন্দ পাঠাগার এবং এস বি গার্লস স্কুল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, টলি নালার পাড় দখলমুক্ত হওয়ার পরে এলাকায় একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। অনেকে ওই এলাকায় সকালে-বিকেলে হাঁটতেও যেতেন। কিন্তু ফের দখলদারির জেরে এখন ও দিকে আর কেউ যেতে চান না। স্থানীয় বাসিন্দা সমর রায়ের কথায়: “চোখের সামনেই দখলমুক্ত জমি পুনরায় দখলদারদের হাতে চলে গেল। প্রশাসন এই দখলদারি আটকাতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।”
কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরো সূত্রে জানা গিয়েছে, গড়িয়া মোড়ের টালিগঞ্জ ও বোড়ালগামী অটোস্ট্যান্ড ওই দখলমুক্ত জমিতে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলরের কথাও হয়। কিন্তু জমিটি ফের দখলদারির গ্রাসে চলে যাওয়ায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যায়নি।
১১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের চয়ন ভট্টাচার্য বলেন, “টলি নালার পাড় দখলমুক্ত করা হয়েছিল আমাদের সময়ে। দখলমুক্ত জমি ফের দখল হয়ে যাওয়ার পিছনে স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতার মদত রয়েছে।”
১০ নম্বর বরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ কথা অস্বীকার করে বলেন: “আমি বরো চেয়ারম্যান থাকার সময়ে টলি নালা সংলগ্ন ওই জমিতে গড়িয়ার অটোস্ট্যান্ডটি স্থানান্তরের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। জমিটি সেচ দফতরের। সেচ দফতরের কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম। তারা অনুমতিও দিয়েছিল। সে চিঠি আমার কাছে রয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীনই ওই জমি ফের দখল হয়ে যায়।”
১০ নম্বর বরোর বর্তমান চেয়ারম্যান তৃণমূলের তপন দাশগুপ্ত বলেন, “এই পরিকল্পনা যখন নেওয়া হয়েছিল তখন আমি চেয়ারম্যান ছিলাম না। এই রকম একটি পরিকল্পনার কথা এক বার শুনেছিলাম। সবিস্তার খোঁজ না নিয়ে এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।”
সংশ্লিষ্ট বরো সূত্রে খবর, টলি নালার পাড় থেকে আগে যাঁদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল তাঁদের অধিকাংশেরই যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ, আগে যাঁরা পুনর্বাসন নিয়ে উঠে গিয়েছিলেন তাঁদের পরিচিত মানুষজনই জমি দখল করেছেন। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেব। তার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ছবি: সুব্রত রায়




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.