পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসত
বেসামাল শহরের দিনলিপি
যন্ত্রণার যাতায়াত
টেন্ডার হয়েছে চার মাস আগে। কিন্তু সংস্কারের দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, নর্দমার কাজ চলছে। এ দিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তা ভেঙেচুরে এমন অবস্থা হয়েছে যে বারাসত পুরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাছে যাতায়াত এখন নিত্যদিনের যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভেঙেচুরে পিচের চাঙড় উঠে গিয়ে বেহাল হয়ে রয়েছে বারাসত পুরসভার অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা হৃদয়পুর স্টেশন রোড। যশোহর রোডের হৃদয়পুর মোড় থেকে শুরু হয়ে হৃদয়পুর স্টেশনে মিশেছে রাস্তাটি। বারাসতের প্রায় কয়েক হাজার বাসিন্দার নিত্যদিনের যাতায়াত এই রাস্তা দিয়ে। শুধু এই রাস্তাটিই নয়, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকাংশ রাস্তাই ভাঙাচোরা।
দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না হয়েই পড়ে আছে কৈলাসনগর রোড, দক্ষিণায়ন রোড, নবতীর্থ রোড, মল্লিকবাগান রোড, মানবতা স্কুল রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তাগুলি।
বারাসত পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাহাপল্লি পূর্বপাড়া থেকে বাদু পর্যন্ত কুতুলসাহি রোডের সর্বত্র পিচের চাঙড় উঠে এবড়োখেবড়ো হয়ে রয়েছে। অভিযোগ, গত চার বছরে কোনও সংস্কার না হওয়ায় রাস্তার কোথাও কোথাও দেড় হাত পর্যন্ত ভেঙে গিয়ে নিচু হয়ে আছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চলন্ত দু’টি গাড়ি মুখোমুখি পাশ কাটাতে গেলে উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। এই অঞ্চলে যাতায়াতের প্রধান উপায় ভ্যানরিকশা। দিনের বেলা হাতে গোনা কয়েক জন ভ্যান রিকশা চালালেও রাস্তা খারাপ হওয়ার জন্য বিকেলের পরে ভ্যানরিকশা প্রায় চলে না বললেই চলে।
টেন্ডার হওয়ার পরে একমাত্র ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের হরিনাথ সেন রোডের অর্ধেক রাস্তায় সংস্কারের কাজ হয়েছিল। বাকি রাস্তা এখনও পড়ে রয়েছে সংস্কারের অপেক্ষায়। ভাঙাচোরা রাস্তায় যন্ত্রণার যাতায়াতের প্রায় একই রকম ছবি দেখা যাবে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নবপল্লি সার্কুলার রোড, এক নম্বর ওয়ার্ডের আরদেবক রোড এবং ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের অশ্বিনীপল্লি স্কুল রোডেও।
স্থানীয়দের দাবি, যে সব জায়গায় নর্দমা তৈরির কাজ হয়ে গিয়েছে সেখানে পুরসভা রাস্তা তৈরি করে দিলে সমস্যার খানিকটা সুরাহা সম্ভব। কেএমডিএ-র তরফে এই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার দীপঙ্কর রায় বলেন, “যে সব রাস্তায় নর্দমা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে সেই রাস্তাগুলি সংস্কার করতে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।”
যদিও বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “সমস্যার কথা এলাকাবাসী ও কাউন্সিলরেরা আমায় জানিয়েছেন। নর্দমা তৈরির কাজ শেষ হলেই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
হরিনাথ সেন রোড, অশ্বিনীপল্লি স্কুল রোড এবং নবপল্লি সার্কুলার রোডের সংস্কারের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে পুরসভার কাছে টাকা নেই।
যতটুকু টাকা ছিল তা দিয়ে খানিকটা কাজ হয়েছে। কুতুলসাহি রোড-সহ বাকি যে রাস্তাগুলো খারাপ হয়ে রয়েছে টাকা পেলেই সেগুলিরও টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.