|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসত |
বেসামাল শহরের দিনলিপি |
বিচ্ছিন্ন সংযোগ |
সত্যজিৎ চক্রবর্তী |
নর্দমা নির্মাণের কাজের জেরে বারাসতে বিপর্যস্ত টেলিফোন ও ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে এক দিকে, গ্রাহকেরা বঞ্চিত হচ্ছেন ইন্টারনেট পরিষেবা থেকে। অন্য দিকে, প্রচুর টাকা আর্থিক ক্ষতির মুখে ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেডের (বিএসএনএল) ক্যালকাটা টেলিফোন্স-এর বারাসত ডিভিশন।
বারাসত পুর এলাকার নিকাশির সমস্যা মেটাতে ৩২টি ওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের অধীনে প্রধান নর্দমা তৈরি করছে কেএমডিএ। এর জন্য বড় বড় বুলডোজার দিয়ে কেটে তোলা হচ্ছে মাটি। আর এই মাটি কাটার সময়েই মাটির নীচ দিয়ে যাওয়া ইন্টারনেট সংযোগের তার ও টেলিফোনের তার ছিঁড়ে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে সংযোগ।
|
|
বাসিন্দাদের অভিযোগ, ছিঁড়ে যাওয়া তার কবে জুড়বে সে
ব্যাপারে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানাতেও পারছে না ক্যালকাটা টেলিফোন্স-এর বারাসত ডিভিশন। বিএসএনএলের অভিযোগ, কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে তাদের জানানো হলে মাটি কাটার সময়ে তারা নিজেদের কর্মী রাখত। ওই কর্মীরা বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ছিঁড়ে যাওয়া তার জোড়া দিয়ে অন্য পদ্ধতিতে পরিষেবা অব্যাহত রাখতে পারতেন। কিন্তু বিএসএনএলের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই কেএমডিএ মাটি কাটার কাজ শুরু করে। ফলে চতুর্দিকে এত ছেঁড়া তার জোড়া ও বিকল্প সংযোগ দেওয়া বিএসএনএলের পক্ষে সম্ভব নয়।
স্থানীয় বাসিন্দা রাহুল রায়ের কথায়: “দু’মাস ধরে টেলিফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। অথচ প্রতি মাসে পরিষেবার টাকা দিতে হচ্ছে। অভিযোগ জানিয়েছি।
কিন্তু ক্যালকাটা টেলিফোনসের বারাসত ডিভিশন জানিয়েছে, নর্দমা ও রাস্তা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হলে তার পরে সংযোগ দেওয়া হবে। কেএমডিএ ও বারাসত পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নর্দমা তৈরির কাজ চলবে দু’বছর ধরে। |
|
সে ক্ষেত্রে কি সংযোগ পাওয়ার
জন্য বাসিন্দাদেরও দু’বছর অপেক্ষা
করতে হবে?
উত্তর নিয়ে ধন্দে বিএসএনএল এবং বাসিন্দারা উভয়েই। বিএসএনএল সূত্রে খবর, বুলডোজার দিয়ে মাটি খোঁড়ার সময়ে বহুমূল্য তার নষ্ট হয়েছে। এমনকী, বহু এলাকায় ছেঁড়া তারের টুকরো খুঁজেও পাওয়া যায়নি। ফলে বিকল্প পদ্ধতিতে বিজলি বাতির খুঁটি ব্যবহার করে সংযোগ দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু ছেঁড়া তার কোথায় গেল তার কোনও সদুত্তর মিলছে না। বিএসএনএল-এর তরফে বারাসত থানায় কোনও চুরির অভিযোগও দায়ের হয়নি।
বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিএসএনএল-এর তরফে তার নষ্ট হওয়া বা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কোনও অভিযোগ পাইনি।” বিএসএনএল-এর ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার (এক্সটারনাল) নিখিলকুমার মণ্ডলের কথায়: “প্রকল্প শুরুর আগে বৈঠকে কেএমডিএ আমাদের বিষয়টি এক বার জানিয়েছিল। কিন্তু পরে কেএমডিএ অনেকগুলি এলাকায় একসঙ্গে মাটি কাটার কাজ শুরু করে। সব ক্ষেত্রে আমাদের জানানো হয়নি। ফলে আমাদের তরফ থেকে প্রতিটি জায়গায় কর্মী নিয়োগ সম্ভব হয়নি। যে সব গ্রাহক পরিষেবা না পাওয়া সত্ত্বেও প্রতি মাসে পরিষেবার টাকা দিচ্ছেন তাঁরা যদি আবেদন করেন তবে আমরা পরের বিলের সঙ্গে ওই টাকা অ্যাডজাস্ট করে দেব।” এই অভিযোগের ব্যাপারে কেএমডিএ-র সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার দীপঙ্কর রায় বলেন, “আমি সবে দায়িত্বে এসেছি। সবিস্তার খোঁজ নেব। আমাদের তরফে কোনও ত্রুটি থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
ছবি: সুদীপ ঘোষ |
|
|
|
|
|